খােলা বাজার২৪।। সোমবার, ১০ জুলাই, ২০১৭: যাত্রী বোঝাই বাস ডুবে যেতে দেখে দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবল পারভেজ জীবনের কথা ভাবেননি। ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন উদ্ধার চেষ্টায়। পারভেজ যখন ডোবায় পড়া বাসটি ডুবে যেতে দেখে যাত্রীদের জীবন বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তখন অনেকেই বাসটির ডুবে যাওয়ার দৃশ্য ভিডিও করছিলেন। পারভেজের মতো এমন অনেকেই মানুষই মানুষ হয়ে অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। কিন্তু আমরা অনেকেই দিনে দিনে মানুষের বদলে হয়ে যাচ্ছি কেবল ভিডিওগ্রাফার। এক অর্থে পুলিশ কন্সটেবল পারভেজের সাহস, আমাদের গর্ব, ভিডিওগ্রাফারদের লজ্জা!
গত শুক্রবার (৭ জুলাই) জীবন বাজি রেখে শুক্রবার শিশুসহ ২৫ বাসযাত্রীকে উদ্ধার করেছেন তিনি। এর জন্য তাকে পুরস্কৃতও করা হয়েছে। এরইমধ্যে গণমাধ্যমে তিনি গণমানুষের নায়কে পরিণত হয়েছেন। কিন্তু নায়কের স্বভাব পারভেজের জীবনে নতুন নয়। মানুষের বিপদে এগিয়ে আসা তার স্বভাব। গণমাধ্যমের একটি সাক্ষাৎকারে পারভেজ বলেছেন, ‘বাসটি ডুবে যাচ্ছিলো। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসছিল না। এতগুলো মানুষ মারা যাবে, তা ভেবে স্থির থাকতে পারিনি। ঝাঁপিয়ে পড়ি তাদের বাঁচাতে। যদিও আমি নিজেই তাতে মারা যেতে পারতাম। তবে সে চিন্তা তখন মাথায় আসেনি।’ পারভেজ মনে করেন, মানুষের বিপদে মানুষ এগিয়ে আসবেই। কিন্তু পারভেজের ধারণা দেনান্দ্বেন কমেই চলেছে। তবুও টিকে আছে এমন অসংখ্য পারভেজ।
এমন ঘটনা পারভেজের জীবনে নতুন নয়। দুর্ঘটনা দেখে পারভেজ এগিয়ে গেছেন এর আগেও। এর আগের একটি ঘটনা উল্লেখ করে তিনি জানান। গত ১৮ জুন দুর্ঘটনায় আহত এক পুলিশ সদস্যকে ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি করে দাউদকান্দি আসছিলেন তিনি। পথে রাত ৩টায় মেঘনা সেতু প্রান্তে বাসের এক গর্ভবতী যাত্রী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যুমুখে পড়েন। অনেক যাত্রীকে বললেও কেউ এগিয়ে আসেনা। পারভেজ ড্রাইভারকে বলে গাড়ি থামিয়ে তাকে নিয়ে রাস্তা পার হন। মাইক্রোবাস ভাড়া করে সোনারগাঁ উপজেলার সেবা হাসপাতালে তাকে ভর্তি করেন তিনি। তিনি বলেন, গভীর রাতে দ্রুতগতিতে ও বেশি ট্রাক চলাচলের কারণে তখনও আমার মৃত্যু হতে পারত!
এমন অসংখ্য পারভেজ এগিয়ে যাবে মানুষের বিপদে। অসংখ্য মানুষ জীবনের কথা না ভেবেই ঝাঁপ দেবে অন্যের বিপদে। সে কাতারে আমরা দাঁড়াবো কবে?