খােলা বাজার২৪।। শুক্রবার, ১৪জুলাই, ২০১৭: প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে আরও কার্যকর প্রযুক্তি ব্যবহার করতে যাচ্ছে সরকার। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সব পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়নের পুরো কার্যক্রম অটোমেশনে আনার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে থেকে প্রশ্নপত্র প্রিন্ট করা যাবে। সেসব কেন্দ্রে কানেকটিভিটির সুবিধা নেই, সেখানে একটি বিশেষ ডিভাইসের মাধ্যমে পাঠানো হবে প্রশ্ন। সেখান থেকে প্রিন্ট করা যাবে।
পাবলিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটি এ কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে বলে জানা গেছে। একটি নির্ভরশীল সূত্র জানিয়েছে, সরকার প্রশ্ন প্রণয়ের কাজে অটোমেশন করার পাশাপাশি প্রশ্নপত্র তৈরির জন্য বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করবে। এ ক্ষেত্রে সিলেবাস অনুযায়ী বিষয়, অধ্যায় ও প্রশ্নপত্রের মান বণ্টন অনুসারে সব বিষয়ের সম্ভাব্য সব ধরনের প্রশ্ন তৈরি করে গঠন করা হবে প্রশ্নব্যাংক। সেখান থেকেই ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’র ভিত্তিতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্রের একাধিক সেট তৈরি হবে।
সম্প্রতি পাবলিক পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থাগ্রহণের সুপারিশ প্রণয়নে করণীয় নির্ধারণী এক বৈঠকে এসব বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। এসব বিষয়ে আরও তিনটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বিষয়টি আরও পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন তৈরি করবেন। এ তিন কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মূল কমিটি।
কমিটিগুলো হচ্ছেÑ প্রশ্নব্যাংক তৈরি ও নিরাপত্তা উপকমিটি; প্রিন্টিং ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা উপকমিটি এবং লজিস্টিক সাপোর্ট উপকমিটি।
প্রশ্নব্যাংক তৈরি ও নিরাপত্তা উপকমিটির দায়িত্ব হলোÑ সিলেবাস অনুযায়ী বিষয়, অধ্যায় ও প্রশ্নের মান বণ্টন অনুসারে সব বিষয়ের সম্ভাব্য সব ধরনের প্রশ্ন প্রণয়ন করা, সফটওয়্যারের মাধ্যমে সব প্রশ্নের ডাটাবেজের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় একটি প্রশ্নব্যাংক গঠন করা। যেখান থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে একাধিক প্রশ্ন সেট তৈরি করা।
প্রিন্টিং ব্যবস্থাপনা ও নিরপত্তা উপকমিটির দায়িত্ব হলোÑ প্রশ্নপত্র প্রেরণের জন্য উভয়প্রান্তে সফটওয়্যারের মাধ্যমে নিরপত্তা নিশ্চিত করা। প্রশ্ন গ্রহণ ও প্রেরণ প্রান্তে নিরাপত্তার স্বার্থে একাধিক ব্যক্তি এবং প্রাপ্তি প্রমাণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। প্রশ্নপত্রে গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে প্রশ্নপত্র মুদ্রণ করা। যেসব কেন্দ্রে কানেকটিভিটির সুবিধা নেই, সেখানে ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র পাঠানো। কেন্দ্রীয়ভাবে নির্ধারিত এই ডিভাইস নিষ্ক্রিয় করা।
লজিস্টিক সাপোর্ট উপকমিটির দায়িত্ব হলোÑ প্রশ্নপত্র ছাপানোর জন্য কেন্দ্রে আধুনিক মানসম্মত ও উচ্চক্ষমাতসম্পন্ন প্রিন্টার সরবরাহ করা। যন্ত্রাংশ রক্ষণাবেক্ষণে দক্ষ জনবল ও আর্থিক বরাদ্দ প্রদান। প্রশ্নপত্র ছাপানোর জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা। নিরবচ্ছিন্ন ও কাম্যগতির ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবস্থা করা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে কর্মপদ্ধতি বের করতে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সাবকমিটির প্রতিবেদন পেলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয় ও বোর্ডের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। আমাদের সময়