খােলা বাজার২৪।। বুধবার ,০৯ আগস্ট, ২০১৭: আগামী ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়মী লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী আলহাজ্ব এ,কে,এম শহীদুল ইসলাম প্রিন্সিপাল। তিনি নীলফামরী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের ভেরভেরী গ্রামের কৃতি সন্তান। অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলামের বাবা মরহুম পন্ডিত মোঃ আবেদ উদ্দিন আহমেদ। তিনি পাঁচ ভাই চার বোনের মধ্যে সবার বড়।
রাজনৈতিক দিক থেকে নীলফামারী-কিশোরগঞ্জ উপজেলায় একটি বৃহৎ আওয়ামী লীগ পরিবারের একজন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মেধাবী ও বিচক্ষন রাজনৈতিক নেতা হিসাবে তিনি পরিচিত।
তিনি ছাত্র জিবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জরিত।
১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারী “বাংলাদেশ ছাত্রলীগ” নামক যে সংগঠনটির জন্ম হয় সেই পতাকা তলেই আমাদের সমবেত হতে হবে,তিনি এই প্রত্যয়ে স্কুল জিবনেই “বাংলাদেশ ছাত্রলীগ”এর সদস্য হন।
১৯৬২সালে কৈমারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে অধ্যয়ন কালে কচুয়া নিবাসী মুহাম্মদ আব্দুল ওহাবকে ক্লাশের খুব ভালো বন্ধু হিসাবে পেয়ে শিক্ষা জীবনের বাকী সবটুকু সময় একই সাথে পরামর্শ পূর্বক গঠন মুলক রাজনৈতিক চিন্তা চেতনায় বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে নেতৃত্ব দেন।
১৯৬৪-৬৫ইং সালে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বর্ষে নীলফামারী কলেজে অধ্যয়ন কালে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা দুলু সাহেবের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বঙ্গবন্ধুর দিক নির্দেশিত জেলা ভিত্তিক বিভিন্ন কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দেন।
তিনি তৎ সময় ২১শে ফেব্রুয়ারী ভাষা দিবস,আইয়ুব খানের মার্শাল ‘ল ও মৌলিক গণতন্ত্র বিরোধী, তথা পাকিস্থানী রাজনীতির বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ আয়োজিত নানা মূখী কর্ম কান্ডে বিশেষ ভুমিকায় দ্বায়িত্ব পালন করেন।
রাজনৈতিক চেতনায় ১৯৬৬সালে অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম ও তার বন্ধু বর আব্দুল ওহাব রংপুর কারমাইকেল কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ভর্তি বাতিল করে রংপুর কলেজে ডিগ্রীতে ভর্তি হন।
ছাত্রলীগের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুযায়ী ঐ বছরই কেন্দ্র থেকে প্রেরিত ছাত্র নেতা আব্দুর রউফ ও মজিবুল হকের পরিচালনায় রংপুর জেলা ছাত্রলীগ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। তুমুল প্রতিযোগীতার মধ্য দিয়ে ওহাব-শহীদুল প্যানেল বিজয়ী হয়।
সভাপতি হিসাবে আব্দুল ওহাব ও সাধারন সম্পাদক হিসাবে শহীদুল ইসলাম রংপুর জেলা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেন।
রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক থাকা কালীন নিপীড়িত বাঙ্গালীর পক্ষে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা দাবী নিয়ে লালমনির হাট,কুড়িগ্রাম,গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলায় বিভিন্ন বিক্ষোপ সমাবেশে তিনি জোড়ালো অবদান রাখেন।
১৯৬৭ সালে মেধাবী শহীদুল ইসলাম রাজনীতি প্রিয় ব্যক্তি হওয়া সত্বেও ডিগ্রী ফাইনাল পরীক্ষার ২৩দিন হাতে নিয়ে আব্দুল ওহাবসহ রাজনৈতিক দ্বায়িত্ব কমিটির অন্য দুই সদস্যকে অর্পন করে এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ পূর্বক দু’জনই ভালো ফলাফল অর্জন করেন।
১৯৬৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ও তার ও তার বন্ধু আব্দুল ওহাব অর্থনীতিতে এম,এ ভর্তি হন। সেই সময়ের ছাত্রলীগ নেতা ও রাকসু ভিপি আব্দুর রহমানের সহায়তায় জিন্নাহ্ হলে ২৬ নং কক্ষে সিট পান। বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা ও ১১ দফা নিয়ে ১৯৬৯ সালে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম ৫ই জানুয়ারী থেকে ২৪ জানুয়ারী পর্যন্ত চলাকালীন কর্মসূচীতে এ, কে,এম শহীদুল ইসলাম প্রত্যক্ষ অংশগ্রহন করেন।
১৯৬৮-৬৯শিক্ষাবর্ষে “রাকসু”র অধীনে ‘হল ছাত্র সংসদ’ নির্বাচনে জিন্নাহ হল থেকে ছাত্রলীগের প্যানেলে ক্রীড়া সম্পাদক পদে মনোনয়ন দিলে তিনি পাকিস্থানের মদদ পুষ্ট ছাত্র সংগঠন এন,এস,এফ এর ছাত্র পরিচয় ধারী গুন্ডা আব্দুর রহমান ও সূজা বাহিনীর ধর পাকরাও আক্রমনকে পরোয়া না করে জীবন পণ সংগ্রামের মধ্যদিয়ে ক্রীড়া সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৬৯ সালের শেষ দিকে অর্থনীতি বিষয়ে এম,এ ডিগ্রী লাভ করেন।
ছাত্রলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম ছাত্র জিবন শেষ না হতেই ১৯৭০ সালের ১লা আগষ্ট লাল মনির হাট ডিগ্রী কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন।
এর মধ্যে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা ঘোলাটে হতে থাকলে ও ১৯৭০ সালের ১৭ই ডিসেম্বর জাতীয় সাধারন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় জোয়ার স্বীকৃতি না পেলে আন্দোলনের ধারা আরও বাড়তে থাকে। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষনে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠা পাক বাহিনী ২৫শে মার্চ বাঙ্গালী জাতির উপর স্টীম রোলার চালায়,২৬শে মার্চ শুরু হয়,যে যার অবস্থান থেকে মুক্তির চেতনায় স্বাধীনতা যুদ্ধ।
অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম মুক্তির সংগ্রাম ও যুদ্ধ জয়ের চেতনা নিয়ে এপ্রিলের শুরুতে লালমনির হাট ত্যাগ করেন এবং চিলাহাটি বর্ডার হয়ে কলকাতার হলদি বাড়ি ও দেওয়ানগঞ্জে যান,সেখানে অবস্থানরত নীলফামারী মহকুমা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার আলী আহমেদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে মুক্তি যুদ্ধে অংশগ্রহন করে দেশের অভ্যান্তরে চলে আসেন এবং যুদ্ধ চলাকালীন সময় একজন মুক্তি বাহিনী হিসাবে তিনি যুদ্ধকালীন দ্বায়িত্ব পালন করেন।১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর আত্ন সমর্পনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।
তিনি ২০ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসারের কাছে যোগদান পত্র জমা দেন এবং সনদ গ্রহন করে পরের সপ্তাহে তার লালমনির হাট ডিগ্রী কলেজের শিক্ষকতা পদে পূনরায় যোগদান করেন।
পেশাগত জিবনে শিক্ষকতা,রাজনীতি ছাড়াও তিনি বিভিন্ন প্রশিক্ষন নিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন।
গণ শরীর চর্চা,রোভার স্কাউট লীডার,জনসংখ্যা শিক্ষা,প্রি-কমিশন, সামাজিক বনায়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন মুখী কাজে তিনি ভুমিকা রাখেন।
অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম সাহিত্য ও সংষ্কৃতিতেও অবদান রাখতে পিছপা হননি।তার লেখা গান, কবিতা কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আবৃতি ও দেশাত্ববোধক গানের গায়কীতে অসাধারন গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছেন।।১৯৯৪ সালে পদোন্নতি জনিত কারনে তিনি “সদর পুর সরকারি কলেজ” ফরিদপুর সহ দেশের বিভিন্ন কলেজে কর্মরত ছিলেন।
অবশেষে তিনি অধ্যক্ষ হয়ে “মজিদা খাতুন সরকারি মহিলা কলেজ” লালমনির হাটে আবারও ফিরে আসেন এবং ২০০৫ সালে উক্ত কলেজ থেকেই পুর্ন অবসরে যান।।
অবসরে থাকা কালীন রাজনৈতিক বিষয়ে তিনি আরও জোড়ালো রুপে নিজেকে তৈরি করেন। ২০০৫ইং সালের ২৪ ও ২৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগের ডাকে সারাদেশ ব্যাপী হরতাল চলাকালে নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলার মোঃ রাসেল ছাত্রলীগ কর্মী পুলিশ কর্তৃক ধৃত হয়ে নীলফামারী জেলা কারাগারে ৬৫দিন হাজত বাস করেন। উল্লেক্ষ্য রাসেল অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলামের আপন ছোট ভাইয়ের ছেলে।
যার ধারাবাহিকতায় ২০০৮ এর জাতীয় নির্বাচনে সংসদীয় এলাকা-১৪ নির্বাচনী আসন নীলফামারী-৩ এর মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে তৃনমুল আওয়ামী লীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগ সহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা কর্মীর সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করেন এবং দলীয় বিভিন্ন মিটিং- এ অংশগ্রহন ও নেতৃত্ব দেন।
২০০৮ সালের ২০ মে জননেত্রী শেখ হাসিনার নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুটিমারিতে গণ অনশন পালন করা হয়।
তিনি কর্মজীবন ও রাজনৈতিক ব্যস্ততার মধ্যদিয়েও তার সন্তানদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। বর্তমান তার বড় ছেলে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীতে মেজর হিসাবে কর্মরত আছেন। ছোট ছেলে বিবিএ অধ্যয়নরত বর্তমান পর্তুগালে রয়েছেন।
তিনি ধর্মীয় সচেষ্ট চিন্তায় ২০১১সালে স্ব-স্ত্রীক হজ্বও পালন করেন।
রাজনৈতিক চিন্তায় এই প্রবীন নেতার আশা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশ পরিচালনা ও তার সুযোগ্য কন্যা দেশ রত্ন ও বাংলাদেশের চলমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় সংসদ সদস্য রুপে তিনি বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক অবদান মুখী সেবা অব্যাহত রেখেছেন। বর্তমান তিনি ও তার পুরো পরিবার আওয়ামী লীগ দলীয় বিভিন্ন পর্যায় বিভিন্ন পদ থেকে নেতৃত্ব দেশের বিভিন্ন এলাকা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এই মর্মে আওয়ামী লীগের আন্তঃদলীয় উচ্চ পদস্থ নেতা ও নেতৃ বৃন্দের দৃষ্টি আর্কষন ও প্রশাসনিক জড়িপ অনুযায়ী অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রার্থী ও নীলফামরী-৩ আসনের সর্বস্থরের জনগণ ও দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ দেশ বাসীর কাছে দোয়া ও সমর্থন কামনা করেন। সেই সাথে তিনি নীলফামারী-৩ অাসনটি আওয়ামী লীগ দলীয় শক্তি-শালী কাঠামো গঠনে নানা রকম পদক্ষেপ ও উন্নয়ন মুলক কাজ নিরলস ভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি রংপুরে তার নিজেস্ব বাসভবনে সাংবাদিক দের সাথে মত বিনিময় কালে তিনি বলেন- এম,পি হলে তিনি সংসদীয় আসন নীলফামারী-৩ কে একটি শিক্ষা সচেতন,উন্নয়ন মুখী ও প্রগতিশীল মডেল আসন হিসাবে গড়ে তুলার আশা ব্যক্ত করেন।।