খােলা বাজার২৪।। বুধবার ,০৯ আগস্ট, ২০১৭: মাসাকো ওয়াকামিয়া যখন আইফোনের অ্যাপ নিয়ে কাজ শুরু করেন, তখন তার হাতে দেখে গেছে ছোট একটা গণনা যন্ত্র। তখন কি মাসাকো বুঝতে পেরেছিলেন যে, আজ তিনি অ্যাপলের সবচেয়ে পুরনো ও বয়স্ক অ্যাপ ডেভেলপার হয়ে উঠবেন। তিনি কাজ করেন বয়স্কদের স্মার্টফোন ব্যবহারকে সহজ করার কৌশল নিয়ে। তিনি এখনও সেই যন্ত্রের মাধ্যমেই কাজ করেন যাকে বলা হয় ট্রেইলব্লেজার।
আসলে প্রযুক্তি দুনিয়ার কোনো আগ্রহ নেই বুড়ো মানুষদের জন্য। বয়স্কদের জন্য স্মার্টফোনকে সহজ করার বিষয় নিয়ে তারা কোনো কাজ করে না। পুরনো আমলের ফোন নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। তিই ‘কোড’ শেখেন এবং ৮২ বছর বয়সী অ্যাপ ডেভেলপার হয়ে উঠেছেন তিনি।
ষাটের দিকে তিনি নিজেই নতুন নতুন দক্ষতা অর্জনে টুকটাক কাজ করে যেতেন। উৎসাহী কণ্ঠে জানান, বয়স বাড়ার সঙ্গে আপনি অনেক কিছুই হারাতে থাকবেন। আপনার স্বামী, চাকরি, চুল কিংবা চোখের জ্যোতি।
বিয়োগের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। কিন্তু যখন নতুন কিছু শিখবেন, এটাই নতুন কিছু যোগ করবে। এটা উৎসাহব্যঞ্জক।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, একবার পেশাদার হতে পারলে আপনি আবারো শিক্ষার জগতে প্রবেশ করতে পারবেন। ইন্টারনেটের দুনিয়ায় প্রবেশ করতে পারবেন। যদি শিক্ষা অর্জন থামিয়ে দেন তাহলে তার প্রভাব পড়বে প্রতিদিনের জীবেন।
১৯৯০ এর দিকে তিনি কম্পিউটারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ব্যাংকের ক্লার্ক হিসাবে কাজ করতেন। সেটা ছেড়ে দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ে শিখতে থাকেন নিজ উদ্যোগে। কয়েক মাস পরই নিজস্ব সিস্টেম দাঁড় করান। শুরু করেন বিবিএস মেসেজিং থেকে। মাইক্রোসফট পিসি বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের পর অ্যাপলের ম্যাক এবং আইফোনে আগ্রহ পান।
তিনি সব সময়ই সফটওয়্যার ডেভেলপারদের আহ্বান জানাতেন বয়স্কদের নিয়ে কাজ করার। কিন্তু তেমন সাড়া মেলেনি। তাই নিজেই উদ্যোগী হলেন।
ওয়াকামিয়া কোডিংয়ের মৌলিক জিনিসগুলো রপ্ত করেন এবং ‘হিনাদান’ নামের একটি অ্যাপ বানান। এটা জাপানের প্রথম গেমসের ডেডিকেটেড অ্যাপ। এখনকার যুগে তার অনেক চাহিদা। অ্যাপল তাকে বিখ্যাত ওয়ার্ল্ডওয়াইড ডেভেলপার্স কনফারেন্সে নিমন্ত্রণ করেছিল। সেখানে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে পুরনো অ্যাপের নির্মাতা। তার উপস্থিতি কনফারেন্সকে ভিন্ন মাত্রা দেয়।
এখন তার যা বয়স, এ বয়সে কোড লেখা খুবই কঠিন বিষয়। কিন্তু শেখা তার নেশা। বলেন, আমি আসলে প্রোগ্রামিংয়ের মূল বিষয়বস্তুটা বুঝতে চাই। এখন আমি কেবল ‘হিনাদান’ এর মতো অ্যাপ বানানোর প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো চিনতে পেরেছি।
তবুও সুস্থ তিনি। প্রতিদিন মস্তিষ্ক আর দেহ খাটিয়ে ব্যস্ত জীবন কাটাচ্ছেন। বললেন, আমি এত ব্যস্ত যে রোগের দিকে খেয়াল দেওয়ার সময়ও হাতে নেই।