Tue. Jun 17th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

140733fridge

খােলা বাজার২৪।। রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭: ভারতের চেন্নাইর ইলিয়ট সমুদ্রসৈকতের কাছে স্থাপিত একটি ‘কমিউনিটি রেফ্রিজারেটর’ ক্ষুধার্তদের খাবার দান করার পদ্ধতিই বদলে দিচ্ছে। যারা ক্ষুধার্ত তারা চাইলে কাউকে কিছু জিজ্ঞেস না করেই এই ফ্রিজ থেকে খাবার নিয়ে যেতে পারবেন।

কিন্তু এতে খাবার সরবরাহ করে কে?

সমাজ।

যে কেউই চাইলে তাদের অতিরিক্ত খাবার এই ফ্রিজে রেখে যেতে পারবেন। তা হতে পারে ঘরে তৈরি বা রেস্টুরেন্ট থেকে আনা খাবার। ক্ষুধার্তরা কাউকে কিছু জিজ্ঞেস না করেই এই ফ্রিজ থেকে যা ইচ্ছা তা বের করে নিয়ে খেতে পারবেন। কিন্তু তাকে কেউ কিছুই জিজ্ঞেস করবে না। তার কোনো পরিচয়ও দেওয়া লাগবে না।

ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত ৭২ বছর বয়সী ছেঁড়া কাপড় সংগ্রহকারী টোকাই জে কুমার এই ফ্রিজ থেকে কলা ও ফলের জুস খেয়ে নিজেকে রিচার্জ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার মতো একজন স্বজনহারা লোকের জন্য এটি আশীর্বাদস্বরূপ। আমি যদি দুপুরের জন্য খাবার না পেতাম তাহলে আমি ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে থাকতাম।

শনিবার দুপুরের দিকে একদল শিশু ফ্রিজটিতে স্যান্ডউইচ, জুস এবং অন্যান্য খাবার ভরে দিয়ে যায়। স্থানীয় একটি রেস্টুরেনন্টের এক কর্মীও এক বক্স বিরিয়ানি রেখে যায়। ফ্রিজটিতে আরো আছে কলা, কমলা এবং ডালিম।

ফ্রিজটিতে এক প্যাকেট খাবার রাখার পর কামাক্ষী নামের এক ১২ বছর বয়সী শিক্ষার্থী বলেন, ‘ক্ষুধার্ত শিশুরা খাবারের অভাবে নর্দমা থেকে খাবার সংগ্রহ করে খায়। সুতরাং কোনো খাবার অপচয় করার আগে আমাদের উচিত হাজারবার চিন্তা করা। এমন অনেক মানুষ আছে যারা ওটুকু খাবারও পায় না। ‘

প্রিয়াঙ্কা শেঠ নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অন্তত একবারের জন্য হলেও যারা না খেয়ে থাকেন তাদের কথা চিন্তা করুন। ‘

ফ্রিজটির পাশেই রাখা আছে একটি শেলফ। যাতে লোকে পোশাক, খেলনা এবং জুতাও রেখে যান। যাদের এসবের অভাব আছে তারা তা নিতে পারেন।

মা-বাবা হারানো নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অ্যান্টনি সেখান থেকে তার স্বপ্নের একজোড়া ডেনিম ট্রাউজার নিয়েছেন।

অটোরিকশা ড্রাইভার জয়শ্রী একটি রংয়ের বই নিয়েছেন। তার ভাই নিয়েছে একজোড়া জুতা এবং একটি বার্বি ডল। আর তার মা নিয়েছে একটি সালোয়ার।

কমিউনিটি ফ্রিজের এই ধারণাটি ড. ইসসা ফাতিমা জেসমিনের। তিনি পেশায় একজন অর্থডন্টিস্ট। তিনি বলেন, ভারতে যে পরিমাণ খাদ্য উৎপাদিত হয় তার বিশাল একটি অংশ অপচয় করা হয়। আমাদের দেশে যে পরিমাণ খাদ্য উৎপাদিত হয় তা দিয়ে আমাদের দেশের জনসংখ্যার দ্বিগুণ মানুষকে খাওয়ানো সম্ভব। কিন্তু আমাদের উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় ৫০ শতাংশই অপচয় করা হয়। আমরা শুধু লোককে সে খাদ্যটুকুই আমাদের এই কমিউনিটি ফ্রিজে দান করতে বলেছি যা তারা হয়তো ফেলে দিত।

টি আমুধা নামের এক সফটওয়্যার প্রকৌশলী বলেন, ‘প্রতিটি আবাসিক ব্লকে একটি করে কমিউনিটি ফ্রিজ স্থাপন করতে পারলে ভালো হতো। গরিবদেরকে আমরা আমাদের অতিরিক্ত খাবারগুলো দিয়ে দিতে পারতাম। ফলে তাদেরকে আর সরকারের ওপর নির্ভর করতে হতো না। ‘