Tue. May 6th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। শনিবার, ২৮অক্টোবর ২০১৭: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৫ জন শিক্ষক ছুটিতে থাকায় অসহনীয় সেশনজটসহ নানা ধরনের জটিলতায় পড়েছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা ছুটি নিয়ে বিদেশ গিয়ে অনেকেই ফিরে আসছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ে। কেউ কেউ সেখানে চাকরি করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষা ছুটির কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় এমনটি হচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক রয়েছেন ৮৯৯ জন। তাদের মধ্যে বর্তমানে কর্তব্যরত রয়েছেন ৭৭৪ জন। বাকি ১২৫ জন শিক্ষক শিক্ষা ছুটি নিয়ে দেশে কিংবা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তবে এর মধ্যে কিছু শিক্ষকের ছুটি শেষে কর্মক্ষেত্রে যোগদানের কথা রয়েছে, অনেকে আবার ছুটি নিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে। অনেকে আবার নিচ্ছেন সাধারণ কিংবা লিয়েনে ছুটি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এর মধ্যে ৩৩ জন শিক্ষক ছুটি শেষ হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরেননি। তাদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ছুটি বাবদ যে টাকা পাবে তা-ও ফেরত দিচ্ছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বার বার নোটিস পাঠানো হলেও তারা কোনো ধরনের সাড়া দিচ্ছেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক শিক্ষা ছুটির অপব্যবহার করছেন— এমন অভিযোগ করে একাধিক শিক্ষক জানান, অনেক শিক্ষক রয়েছেন যারা শুধু বিদেশে যাওয়ার জন্য শিক্ষক হিসাবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। কারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে কোনো দেশে খুব সহজে ভিসা পেয়ে থাকেন। আর যারা উচ্চতর ডিগ্রির জন্য বিদেশে গিয়ে পাড়ি জমান, তারা উচ্চশিক্ষা শেষ করে বেশি পারিশ্রমিকের লোভে জড়িয়ে পড়েন ঐ দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা অন্য পেশায়। ফলে তারা আর দেশে ফিরে আসার কথা চিন্তা করেন না।

শিক্ষকরা আরো বলেন, উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গেলেও শিক্ষকরা তাদের বেতন-ভাতা ঠিকই পেয়ে থাকেন। এ জন্য তারা বিদেশে গিয়ে অন্য কোথাও কাজ করলে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানান না। এতে করে তারা দুদিক থেকে সুবিধা ভোগ করেন। এ জন্য প্রতিবছর বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য সরকারকে গুনতে হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হচ্ছে সেশনজটসহ নানা জটিলতা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপাপ্ত) প্রফেসর ড. কামরুল হুদা বলেন, ‘প্রত্যেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ছুটির বিধান রয়েছে। কিন্তু শিক্ষকরা যখন ছুটিতে গিয়ে অর্থ উপার্জনে জড়িয়ে পড়েন তখন সুনির্দিষ্ট প্রমাণের অভাবে আমরা কিছুই করতে পারি না। তবে বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এ পর্যন্ত কয়েকজন শিক্ষককে নোটিস পাঠিয়েছি। তারা কোনো ধরনে রিপ্লাই দিচ্ছে না। তারা যদি আমাদের নোটিসের কোনো কারণ না দেখায় তা হলে তাদের চাকরীচ্যুত করা হবে।’