Fri. Sep 19th, 2025
Advertisements

খােলা বাজার২৪। রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৭: শনিবার মিয়ানমার সীমান্তে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে বাংলাদেশের ধানক্ষেতে। কিন্তু তার মা এবং বাবার আদি নিবাস মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে। সেখানে সেনাবাহিনীর নিপীড়নের শিকার হয়ে জীবন নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে শরণার্থী হিসেবে অবস্থান করছেন তারা।

পেটে সন্তান নিয়ে রাত-দিন না খেয়ে, না ঘুমিয়ে, মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে যেই বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন, তখনই একটি ধানক্ষেতে সন্তান প্রসব করেন একজন রোহিঙ্গা নারী। সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার পর এই ছবিটি সংগ্রহ করেছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আসতে যাত্রাপথে এবং অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিনই জন্ম নিচ্ছে অসংখ্য শিশু। এক হিসেবে দেখা গেছে এখানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাত থেকে আটটি করে শিশুর জন্ম হচ্ছে। সন্তানসম্ভবা আরও প্রায় ৭০ হাজার নারী।

ক্যাম্পগুলোতে জন্মনিয়ন্ত্রণ ও ছোট পরিবারের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে কথা বলছেন ইউনিসেফসহ স্থানীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তবে এসব নিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আগ্রহ অনেক কম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জন্ম নিয়ন্ত্রণের যেসব বড়ি ও কনডম রোহিঙ্গা নারীদের সরবরাহ করা হয়েছে, তা তারা ফেলে দিচ্ছেন।

এখনও তাদের বাসস্থান ও খাবারের নিশ্চয়তা না থাকায় তারা এসব নিয়েই বেশি চিন্তিত। জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় তাদের আগ্রহ নেই। থ্যাংখালী এলাকায় নতুন রোহিঙ্গা বস্তির সড়কে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সিংহ ভাগই শিশু। ইউনিসেফ এবং ইউএনএইচসিআরের তথ্যমতে মোট রোহিঙ্গা ৬০ শতাংশই শিশু। এদের মধ্যে পরিবার বিচ্ছিন্ন বা এতিম শিশুর সংখ্যা ৩৬ হাজার তিন শত ৭৩ জন। এখনও প্রতিদিন হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন। নাফ নদীতে নৌকা চলাচলে নিষেধাজ্ঞার পর এখন ভেলায় করে আসছেন রোহিঙ্গারা।

ইউনিসেফ বলছে, আগামী ৬ মাস রোহিঙ্গা শিশুদের সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় ৭৬ মিলিয়ন জরুরি সহায়তার মধ্যে মাত্র ৭ শতাংশ ইউনিসেফের কাছে আছে। তাই দ্রুত দাতাদের সহায়তা তাদের দরকার।