খােলা বাজার২৪। শনিবার, ০২ডিসেম্বর , ২০১৭: ব্রিটিশ রাজপরিবারের দীর্ঘ দিনের সংস্কার ভেঙ্গে প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন মার্কিন টিভি অভিনেত্রী মেগান মার্কেল। মিশ্র বর্ণের মেগান প্রিন্সের চেয়ে তিন বছরের বড়, তিনি ডিভোর্সি, স্বঘোষিত-নারীবাদী, লড়াই করেছেন বর্ণপ্রথা নিয়ে। রাজপরিবারের কয়েক’শ বছরের পুরনো প্রথা ভেঙ্গেছেন তিনি।
ঐতিহ্য, সংস্কার ও রক্ষণশীলতাকে আকঁড়ে ধরা ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রথা ভাঙ্গার কথা বলতেই চলে আসে চিরসবুজ রাজকুমারী ডায়নার নাম। হ্যারি তার প্রেমিকাকে ‘প্রিন্সেস অব ওয়েলস’-এর রাজকীয় সংগ্রহশালা থেকে নেওয়া আংটি দিয়েই বাহুডোরে আবদ্ধ করেছেন। আংটির সঙ্গে জড়িয়ে আছেন ডায়না। কিন্তু শ্বাশুড়ীকে কতটা আকঁড়ে ধরতে পারবেন মেগান?
ইতোমধ্যে কিংসটন প্যালেসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হ্যারিকে বিয়ে করতে হলে মেগানকে ছাড়তে হবে নিজের ক্যারিয়ার, ধর্ম বিশ্বাস, মার্কিন নাগরিকত্ব ও স্বেচ্ছাসেবকের কাজ।
প্রোটেস্ট্যান্ট বিশ্বাস লালন করা মেগান ক্যাথলিক স্কুলের ছাত্রী। তবে বিয়ের পর চার্চ অব ইংল্যান্ডের অনুসারী হতে হবে মেগানকে। হবু রাজবধূ জাতিসংঘের অধীনে বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া ওয়ার্ল্ড ভিশন কানাডা ও ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ডে তিনি চ্যারিটির কাজ করেন। এসব কাজও ছেড়ে দিতে হবে ৩৬ বছর বয়সী এ অভিনেত্রীকে। সেই সঙ্গে ছাড়তে হবে অভিনয় পেশাও।
এমনকি ব্রিটিশ রাজ-পরিবারে নারীবাদির অবস্থান নিয়েও প্রবেশ করতে পারবেন না মেগান। তবে সোমবার জাতিসংঘের নারী বিষয়ক সংস্থা জানায়, ‘মেগান মার্কেল লিঙ্গ সমতার প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনযোগ আকর্ষণে সহায়তা করেছেন। আশা করা হচ্ছে, ব্রিটিশ রাজপুত্র হ্যারির বাগদত্তা মেগান নারীর পক্ষে তার অবস্থান অব্যাহত রাখবেন।’
এর আগে অসম্ভব শক্তিশালী ব্রিটিশ রাজতন্ত্রে বধূবেশে প্রবেশ করে অধিকার, মানবতার পক্ষে কথা বলে ‘রাজদ্রোহী’ খেতাব পেয়েছেন প্রিন্সেস ডায়না। ত্যাগ করেছেন রাজপ্রাসাদ। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রিন্সেস হতে না পারলেও হয়েছিলেন পিপলস প্রিন্সেস। ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের কয়েক’শ বছরের প্রথা ভেঙে ডায়না মিশতেন সবার সাথে। রাণী এলিজাবেথ ও স্বামী চার্লসের কটূ কথা শুনেও ছুটে যেতেন মানবতার সেবায়। বিচ্ছেদের কয়েকমাস আগেও ল্যান্ড মাইন ও এইডস বিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে ছুটে গিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। কাজ করেছেন মানবতার আরেক প্রতিমূর্তি নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে। এখন দেখার বিষয় রাজবধূ হওয়ার পর মেগান সৌন্দর্য্য ও মানবতার রাজকুমারী ডায়নার মত নারী অধিকার, মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার থাকছেন কি-না। ডেইলি মেইল, সিএনএন, বিবিসি