Thu. May 8th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

জবির ছাত্রলীগে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র ক্যাম্পাসখােলা বাজার২৪। বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৮: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের  দুগ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। প্রথম বর্ষের ভর্তিকৃত নবীন শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিং ও ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। এই সংঘর্ষের ঘটনায় স্বপন, সোহান, অয়ন, হিমু,   পার্থ, শরীফ ও ফয়সাল সহ ১৫ ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়। পরবর্তীতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত চার থেকে পাঁচ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। 

জানা যায়, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিংকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলের কর্মী কণিক ও তাইজুদ্দিনকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলামের কর্মীরা মারধর করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল আটটার দিকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে টিএসসিতে সভাপতি গ্রুপের কর্মী স্বপনকে (১২তম ব্যাচ,সমাজবিজ্ঞান) সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মী রাতুল,সৈকত,স্বপন (১২তম ব্যাচ)সহ আট থেকে দশ ছাত্রলীগ কর্মীরা মারধর করে।

এক পর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত করেন। এরপর সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে দেশীয় অস্ত্র রামদা,চাপাতি,ছুড়ি,রড,হাতুড়ী,লাঠিসোঠা নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দেয়। এক পর্যায়ে তারা সাধারণ সম্পাদকের কর্মীদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে। এ পরিস্থিতিতে সাধারণ সম্পাদকের কর্মীরাও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকে। এসময় পুরো ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরলে প্রতিটি বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিজেদের আত্মরক্ষা করার চেষ্টা করেন। এই পরিস্থিতিতে নবীন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। এসময় সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপের কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সভাপতি গ্রুপের কর্মী সোহানের (১১তম ব্যাচ,মার্কেটিং) উপর হামলা করে। আহত অবস্থায় সোহানকে প্রথমে ন্যাশনাল পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

এক পর্যায়ে এক গ্রুপ অপর গ্রুপকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি থমথমে বিরাজ করলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি তরিকুল ইসলাম ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে তার কর্মীদের নিয়ে শহীদ মিনারের সামনে এসে ছাত্রলীগ কর্মীদের শান্ত হয়ে ইট, পাটকেল, লাঠি, সোঠা ও অস্ত্র  ফেলার নির্দেশ দেন। এসময় সাধারণ সম্পাদকের কর্মীরা লাঠি,সোঠা,অস্ত্র ফেলে দিলে এই সুযোগে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে সম্পাদকের কর্মীদের উপর আবার হামলা করেন। এ সময় সাধারণ সম্পাদকের কর্মী অয়ন, হিমু,পার্থ,শরীফ (১২তম ব্যঠঢ়) গুরুতর আহত হন। অয়নকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের কর্মী তানভীর চৌধুরী শাকিল ওরফে মশাল শাকিল (১২ তম ব্যাচ,মার্কেটিং) হাতুরী দিয়ে মাথা থেতলে দেয়। পরে সম্পাদক গ্রুপের কর্মীরা ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাসে বিচ্ছিন্ন ভাবে অবস্থান নেন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কঠোর নির্দেশ না পাওয়ায় ঘটনার সময় পুলিশ নিরব দশর্কের ভূমিকা পালন করেন। পরে লালবাগ জোনের ডিসি এব্রাহিম খলিল কঠোর নির্দেশ দিলে কোতআলী জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার বদরুল হাসান রিয়াদেও নেতৃত্বে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায়। এসময় ইট,পাটকেল,রড,হাতুরী,লাঠিসোঠাসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেন। 
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন,
 সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনি ব্যবস্থা নেয়া হবে । 

এসময় কোতয়ালী জোনের এসি বদরুল হাসান রিয়াদ বলেন, ক্যাম্পাসে পুলিশ কঠোর অবস্থান নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য চার থেকে পাঁচ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এবিষয়ে  জবির প্রক্টর ড.নূর মোহাম্মদ বলেন, এই ঘটনা আমি উপস্থিত ছিলাম। তবে এখনো পর্যন্ত কোন ধরনের লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুলিশের সহায়তায় বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান তিনি। পুলিশের নিরব ভুমিকা ব্যাপারে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির নিজেরায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছিল তাই পুলিশ প্রশানকে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়নি।