Wed. May 7th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। শনিবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৮: সেলফোন অপারেটর বাংলালিংক ও এয়ারটেলের (বর্তমানে রবি আজিয়াটার ব্র্যান্ড) পরিচালন পদ্ধতি ও আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় আগ্রহপত্র (ইওআই) আহ্বান করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ২৯ জানুয়ারির মধ্যে আগ্রহী নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানকে আবেদন করতে বলা হয়েছে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠান দুটির পরিচালন পদ্ধতি ও আর্থিক হিসাব নিরীক্ষার জন্য নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) নিবন্ধিত হতে হবে। পাশাপাশি কোনো পরামর্শক বা তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ও বিদেশী নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতা বা সমঝোতা থাকতে হবে।

বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় সেলফোন অপারেটরদের নিরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামীতে তিন বছর পরপর নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এ কার্যক্রমের আওতায় আসবে খাতের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক কমপ্লায়েন্স ব্যবস্থাপনাকেও নজরদারির আওতায় আনা হবে। আর এতে ব্যত্যয় ঘটলে আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে কমিশন।

এরই মধ্যে শীর্ষ সেলফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়োগ দেয়া দুই নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান। গ্রামীণফোনের পরিচালন পদ্ধতি ও আর্থিক হিসাব নিরীক্ষার জন্য ২০১৫ সালের ৬ অক্টোবর নিয়োগ দেয়া হয় নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান তোহা খান জামানকে। প্রতিষ্ঠানটির বিদেশী সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ভারতের সিএনকে অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস। তোহা খান জামান একই বছরের ২০ অক্টোবর এ নিরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। চুক্তি অনুযায়ী ছয় মাসের মধ্যে নিরীক্ষা শেষ করার কথা থাকলেও গ্রামীণফোনের অসহযোগিতার কারণে প্রথম তিন মাস সরেজমিনে নিরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবেদনের ভিত্তিতে কয়েক দফায় সময় বৃদ্ধি করা হয়।

আর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ইনফরমেশন সিস্টেম অডিটের জন্য স্থানীয় নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান মসিহ মুহিত হক অ্যান্ড কোম্পানি ও ভারতীয় সহযোগী নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান পিকেএফ শ্রীধর অ্যান্ড সান্থানাম এলএলপির সঙ্গে ২০১৬ সালের মার্চে চুক্তি করে বিটিআরসি। বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরুর পর প্রথমবারের মতো সেলফোন অপারেটর রবির ইনফরমেশন সিস্টেম অডিটের কার্যক্রম শুরু করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

এদিকে তিন বছর অন্তর সেলফোন অপারেটরদের নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্নের বিষয়ে সম্প্রতি এক নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। আগামীতে ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ), ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ (আইআইজি), ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স) ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এজন্য পরিকল্পনা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

টেলিযোগাযোগ আইনের ৩১ (জ) ও ৩১ (ঝ) ধারা অনুযায়ী, সেলফোন অপারেটরদের স্থাপনা পরিদর্শন, পরিচালনা পদ্ধতি ও আর্থিক তথ্যাবলি নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা কমিশনের এখতিয়ারাধীন। নিয়োগপ্রাপ্ত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান কর ফাঁকি, আয় বার্ষিক প্রতিবেদনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা, সরকার তথা বিটিআরসি, রাজস্ব বোর্ডের পাওনা ঠিকমতো পরিশোধ হচ্ছে কিনা, সফটওয়্যার ও যন্ত্রপাতির ঘোষিত আমদানি মূল্য কতটুকু সঠিক, এসব বিষয় খতিয়ে দেখবে।

২০১১ সালে সেলফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও বাংলালিংকের নিরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করে বিটিআরসি। শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই বাংলালিংকে নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় অপারগতা প্রকাশ করে আহমেদ জাকের অ্যান্ড কোম্পানি। তবে একই বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে গ্রামীণফোনের নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করে ফজল অ্যান্ড কোম্পানি। এ নিরীক্ষার ভিত্তিতে ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর গ্রামীণফোনের কাছে ৩ হাজার ৩৪ কোটি টাকা চেয়ে চিঠি দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। যদিও দেশীয় প্রতিষ্ঠান ফজল অ্যান্ড কোম্পানির যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে গ্রামীণফোন। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে আদালতেও যায় তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়োগের মাধ্যমে নিরীক্ষা কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নেয়া হয়। বণিক বার্তা