খােলা বাজার২৪। শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৮: উচ্চ আদালতের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলো। সংগঠনের নেতারা বলছেন এর আগেও বার বার উদ্যোগ নেওয়ার পরও ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এবারও ব্যতিক্রম হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্র নেতারা। টিভিএনএ’র সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ, ছাত্রদল এবং ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
গত ১৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন দিতে ৬ মাসের সময় বেঁধে দিয়েছে হাইকোর্ট। তারপর থেকে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সরগরম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেহেদী হাসান তালুকদার বলেন, যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে তারা কখনো চাইবে না ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। কারণ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া মানেই গণতন্ত্র ফিরে আসা। তাছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডাকসু থেকেই বিগত দিনে সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ হয়েছে। তাই ডাকসু নির্বাচন এই সরকার দিবে কিনা এটা নিয়ে আমরা সংঙ্কিত।
হাইকোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি তুহিন কান্তি দাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সরকারি ছাত্র সংগঠনগুলোর আন্তরিতার অভাবেই ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি এতদিন। এই রায়ের ফলে একটু আশার আলো দেখা দিয়েছে। তবে তা কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে আমাদের সংশয় রয়েছে। কারণ ইতোপূর্বে হাইকোর্ট কেন ডাকসু নির্বাচন হবে না এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্টদের কাছে জবাব চেয়েছিল। কিন্ত কর্তৃপক্ষ এর কোন সঠিক জবাব দিতে পারেনি।
তবে ৬ মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশার কথা জানিয়েছে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ হাসান প্রিন্স। তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী আগামী ৬ মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার রায় হওয়ার পর আমরা প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদের বলেছেন আদালতের রায়ের কপি হাতের আসার পর ছাত্র সংগঠনের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ ছাত্র সংগঠনগুলো করে। তা মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন ছাত্রলীগের এই নেতা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময়ই সহ অবস্থানে বিশ্বাস করে। শিক্ষার পরিবেশ বজায় থাকুক তা তারা সবসময়ই চায়।
সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রদলের আহবায়ক সদস্য আবদুর রহমান সাজ্জাদ বলেন, গত ২৭ বছর থেকে ছাত্ররা তাদের অভিবাবক শুণ্য। এখানো নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে আমরা সন্দিহান। অতীত ইতিহাস থেকে আমরা দেখেছি ডাকসুর উদ্যোগেই বিভিন্ন আন্দোলনগুলো পরিচালিত হয়েছে। এই অবৈধ সরকার কখনো চাইবে না ডাকসু নির্বাচন দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোন শক্তিকে দাঁড় করাতে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) বিধান অনুযায়ী, প্রতিবছর নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না। প্রায় ২২ বছর আগে ১৯৯০ সালের ৬ জুলাই ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচনের কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। তাদের এই ব্যর্থতার কারণে হাজার হাজার শিক্ষার্থী তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ১৯৯৮ সালের ২৭ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ডাকসু নির্বাচনের পর এর সময়সীমা হবে এক বছর। পরবর্তী তিন মাস নির্বাচন না হলে বিদ্যমান কমিটি কাজ চালিয়ে যেতে পারবে। এ সিদ্ধান্তের পর ডাকসু ভেঙে দেওয়া হয়।