খােলা বাজার২৪। রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮: উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রযুক্তির বিকল্প নেই। সঠিক প্রযুক্তির সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে জটিল সব সামাজিক সমস্যাকে অনায়াসেই দূর করা সম্ভব। বলা হয়ে থাকে, প্রযুক্তিকে ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারলে দারিদ্র্য থেকে শুরু করে এইডস সব কিছুই সমাধান করা যায়। সময়ের সাথে সাথে তরুণ প্রজন্মও তাই ঝুঁকে পড়ছে স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটারের দিকে। কিন্তু কম্পিউটার কিংবা স্মার্টফোনের স্ক্রিনে শিশু-কিশোরদের ডুবে যাওয়াটা অভিভাবকদের জন্য দিন দিন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। শিশু কিশোরদের এই অতিমাত্রায় স্মার্টফোনের স্ক্রিনে ডুবে থাকার অভ্যাসটা তাদের স্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি হিসেবে দেখা দিতে পারে। তাই এখন সময় এসেছে অভিভাবকদেরই ঠিক করে দিতে হবে – ঠিক কতটা সময় সন্তানরা সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা স্মার্টফোনের মতো ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কম্পিউটার ও সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিমোথি ডোনাল্ড কুকও সমপ্রতি শিশুদের ডিজিটাল যন্ত্রপাতি এবং সোশ্যাল মিডিয়ার সংস্পর্শে না আসার বিষয়ে মত দিয়েছেন। মূলত একজন শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ শিশুদের ডিজিটাল যন্ত্রপাতি এবং সোশ্যাল মিডিয়ার সংস্পর্শে আসার ক্ষতিকর বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করার পর এই ঘোষণা দেন টিমোথি ডোনাল্ড কুক। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে মানুষ কখনো উপকৃত হন আবার কখনো হতাশা বাড়ার মতো বড় ধরনের ক্ষতির মুখেও পড়ে। তবে এই জন্য ঢালাওভাবে বলা ঠিক হবে না যে, প্রযুক্তি ব্যবহার করাটা ক্ষতিকর। তাই ডিজিটাল মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের কতটা সময় বিচরণ করাটা নিরাপদ সেই প্রশ্নটি এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে।
২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যের ১৫ বছর বয়সী এক লাখ বিশ হাজার শিশুর ওপর ইউনিসেফ একটি জরিপ করে। সেই জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, যেসব ব্যবহারকারীরা কম মাত্রায় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেছে তাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা। অন্যদিকে যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি সময় কাটিয়েছে তারা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগের পরিবর্তে অন্য বিষয়ে বেশি মনোযোগ দিতো। যারা প্রতিদিন গড়ে দুই ঘণ্টার বেশি এবং ছুটির দিনে চার ঘণ্টার বেশি সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটায় তারা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখার পরিবর্তে অন্যান্য বিষয়ে আগ্রহী থাকে। এসব তথ্য থেকে দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে এক শতাংশেরও কম শিশু উপকৃত হয়। ইউনিসেফের এই গবেষণায় এও বলা হয়েছে যে, কখনো কখনো শিশুদের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে ভালো ভূমিকা রাখতে পারে ডিজিটাল যন্ত্রপাতি। সবদিক বিবেচনা করে অভিভাবকদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে কীভাবে এবং কতটুকু সময় ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবে সন্তানরা। সূত্র: বিবিসি এবং ইত্তেফাক