Sun. Oct 12th, 2025
Advertisements

খােলা বাজার২৪। সোমবার ২৫ জুন ২০১৮ : কামরুল হাসান, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ১১নং বৈরচুনা ইউ’পি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনী এক সাংবাদিককের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে মোবাইল ফোন, ক্যামেরা, মটরসাইকেলের চাবি সহ কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া সহ হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ২৩ জুন শনিবার রাতে ঐ ইউপি চেয়ারম্যান সহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে জানা যায়। মামলার এজাহার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, পীরগঞ্জ উপজেলার বৈরচুনা বিজিবি গত বুধবার ১০ বোতল ফেন্সিডিল সহ স্বাধীন চন্দ্র রায় নামে এক মাদক ব্যবাসয়ীকে আটক করে। পরে বৈরচুনা ইউ’পি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন ঐ মাদক ব্যবসায়ীকে বিজিবি’র কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেয়। বিশ্বস্ত সুত্রে এমন খবর জানতে পেরে গত বৃহস্পতিবার দৈনিক খবর পত্রের ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জ প্রতিনিধি মুনসুর আহম্মেদ ঐ ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট ঘটনা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান স্বীকার করেন, ১০ বোতল নয় ১ বোতল ফেন্সিডিল সহ স্বাধীন চন্দ্র করে আটক করে বিজিবি।

মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড়ালেন কেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি সাংবাদিকের উপর ক্ষিপ্ত হন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরদিন শুক্রবার সকালে সড়ক দূর্ঘটনার খবর পেয়ে ঐ সাংবাদিক বৈরচুনা ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ইউ’পি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে তাকে ঘিরে ফেলে টানা হেচড়া করে সন্ত্রসী কায়দায় তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ক্যামেরা, মটরসাইকেলের চাবি সহ মূল্যবান তথ্যের কাগজপত্র কেড়ে নেয় এবং হত্যা করার হুমকি দেন।

পরে সাংবাদিক মুনসুর আহম্মেদকে ঐ চেয়ারম্যান জিম্মি করে তার ইউ’পি কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে জোর পূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর গ্রহণ করে মোবাইল ফোন, ক্যামেরা ও মটর সাইকেল’র চাবি ফেরত দেন।

উল্লেখ্য যে, ইতিপূর্বে বৈরচুনা এলাকার সংখ্যালঘু অদিবাসীদের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ঐ ইউ’পি চেয়ারম্যান বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয় এবং তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দেয় থানা পুলিশ। এতে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন ঐ চেয়ারম্যান, অভিযোগ আছে, পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ভাবে মাদক ব্যবসায়িদের সঙ্গে আঁতাতেরও। সদ্য রমজান ঈদে হত দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ এর চাল প্রতি স্লিপে ১০ কেজি দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা পাওয়া যায়নি। আরও জানা যায় যে, এলাকায় তার প্রভাব বিস্তারের জন্য কিছু বখাটে ও উশৃঙ্খল একটি দল রয়েছে।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। পরে সাংবাদিক মনসুর বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।

আমাদের প্রতিনিধি পীরগঞ্জ থানার ওসি আমিরুজ্জামান এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, হ্যাঁ সাংবাদিক মনসুর মামলা করেছে। যার নং ২২/১৮৭। পীরগঞ্জ থানার স্মারক নং ১৬৬৭(৩)/১, তারিখ ২৪/০৬/২০১৮।  তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।