Tue. Sep 23rd, 2025
Advertisements


খোলা বাজার ২৪.রবিবার,২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলে শাখা ছাত্রলীগের তিন নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারধরে গুরুতর আহত শিক্ষার্থীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবদুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি রাজশাহীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তাঁর চোখের কোণে চারটি সেলাই লেগেছে।
ওই শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত তাঁকে আটকে রেখে নির্যাতন করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে গাঁজা সেবন করেছে এই মর্মে ভিডিও করে স্বীকারোক্তি আদায় করে।
ছাত্রলীগের যে তিন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে উঠেছে তাঁরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আবদুল্লাহিল কাফি, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লাহিল গালিব ও ছাত্রলীগকর্মী শুভ্র দেব। বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি। তবে তাঁদের দাবি, আবদুর রহমান মাদক সেবন করে পালাতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে আঘাত পেয়েছেন।
হল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাদার বখ্শ হলে বিভাগের এক বড় ভাইয়ের কাছে পরীক্ষার নথি আনতে যান আবদুর রহমান। নথি আনার সময় হলের গেটে কাফি, গালিব, শুভ্রসহ কয়েকজন আবদুর রহমান কোথায় গিয়েছিলেন, তা জানতে চান। রহমান নথি আনতে এসেছিলেন বলার পর তাঁকে চলে যেতে বলে পেছন থেকে কোমরে লাথি দেওয়া হয়। পরে আবদুর রহমানকে হলের অতিথি কক্ষে নিয়ে ব্যাপক মারধর করেন তাঁরা। একপর্যায়ে তাঁকে হলের ওয়াশরুমে নিয়ে রড ও স্টাম্প দিয়ে পেটানো হয়।
আবদুর রহমান বলেন, ‘যতবারই আমি মাদক সেবন করিনি বলেছি, ততবারই আমার ওপর চড়াও হয়েছেন গালিব, কাফি ও শুভ্র। আমাকে উপর্যুপরি স্টাম্প ও রড দিয়ে আঘাত করেন এবং আমার কাছে থাকা কোম্পানির পাঁচ হাজার টাকা কেড়ে নেন। গাঁজা সেবনের বিষয়টি স্বীকার না করলে আমাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেন। ভয়ে আমি বিষয়টি স্বীকার করি। পরে তাঁরা আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে রেখে চলে যান।’

আবদুর রহমানকে মারধর করা হয়নি বলে দাবি করেন গালিব, কাফি ও শুভ্র। তাঁরা বলেন, ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে রাতে হলে মাদকবিরোধী অভিযান চলছিল। এ সময় হলের ছাদে মাদক সেবন করতে দেখে দলের জুনিয়র কয়েকজন কর্মী তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় পালাতে গিয়ে আবদুর রহমান সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে চোখে আঘাত পান। পরে তাঁরা তাঁকে আটক করে চড়-থাপ্পড় দিয়ে হল প্রাধ্যক্ষের হাতে তুলে দেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘বহিরাগত কয়েকজন হলের ছাদে বসে মাদক সেবন করছিল। এ সময় শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। তবে কাউকে মারধর করা হয়নি।’
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুল আলিম বলেন, ‘মারধরের বিষয়টি আমাকে জানানো হলে আমি আবদুর রহমানকে হাসপাতালে দেখতে যাই। যদিও সে আমার হলের শিক্ষার্থী না। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি, যারা এ ঘটনায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’