Tue. Apr 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements


খোলা বাজার ২৪,বুধবার,০৭ নভেম্বর ২০১৮ঃ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘আজ এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকেই বলে যাচ্ছি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণতন্ত্রকে মুক্ত করে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবোই।’

মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

 

কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘বিএনপির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অভিযোগ- বিএনপি রাজাকারের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে কিন্তু অভিযোগটি সত্য নয়। আওয়ামী লীগ প্রথম রাজাকারের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রথম সড়িষাবাড়ির রাজাকার নূরুল আলমের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে, আওয়ামী লীগ রাজাকার মহিউদ্দিনের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে, আওয়ামী লীগ আশিকুর রহমানের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপিতে যোগদান করি নাই, আমি ড. কামাল হোসেনের ঐক্যফ্রন্টে যোগদান করেছি। নির্বাচনে যদি জয় আপনাদের হাতে, আর যদি আপনারা হারতে চান তাও আপনাদের হাতেই। শেখ হাসিনা আপানাদেরকে বিজয়ীও করতে পারবে না আবার পরাজিতও করতে পারবে না। যদি জিততে চান তাহলে নির্বাচন পর্যন্ত সব ভুলে গিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শান্তির পতাকাতলে নির্বাচন পর্যন্ত হিমাদ্রির মতো সোজা হয়ে দাঁড়ান।’

তিনি আরও বলেন, আজ এই জনসভাকে ভয় পেয়ে সরকার রাস্তায় গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে। গাবতলী বন্ধ, টঙ্গি বন্ধ। সব রাস্তা বন্ধের পরেও আমার বোনরে একটু বলা উচিত একটু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আইসা দেইখা যাইয়েন। গত ৪ তারিখ উনি (প্রধানমন্ত্রী) এখানে এসেছিলেন আল্লামা শফীর এক মিটিং-এ। আল্লামা শফী ভুলে যেতে পারেন কিন্তু আমি কাদের সিদ্দিকী ভুলি নাই। শাপলা চত্বরে ঈমানদারের রক্ত ঝঁড়িয়েছে। এই রক্তের বদলা না নিলে আমরা বেঈমানে পরিণত হবো।’

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, ‘নির্বাচন দিতে হবে হাসিনাকে। উপায় নাই। আমি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই না। কারণ আজকে বেগম খালেদার মুক্তি চাওয়ার কোনও দরকার নাই। আমাদের চিন্তা করতে হবে হাসিনার মুক্তি কবে হবে। বেগম খালেদা জিয়া জেলখানায় গিয়ে গণতন্ত্রের প্রতীক হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া জেলখানায় বন্দি থেকে প্রতিটি মানুষের অন্তরে জায়গা করে নিয়েছেন। আমি জানি বাংলাদেশকে বন্দি রাখা যায় না, তাই বেগম খালেদা জিয়াকেও বন্দি রাখা যাবে না।’

বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আপনাদের নেতারা কিন্তু খুব চিন্তিত। আপনাদের কর্মীদের জেলে নেয়ার জন্য। আমি খুব খুশি আপনাদের পেছনে পুলিশ দৌঁড়ানোর কারণে। কারণ আপনাদের পেছনে পুলিশ দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে পুলিশ হয়রান হয়ে যাবে তখন কিন্তু ভোট চুরি করতে পারবে না।’

বঙ্গবীর বলেন, ‘একটা জালেমের কথার মূল্য আছে কিন্তু সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কথার কোনও মূল্য নাই।’

আরো পড়ুন : সমাঝোতার নামে নাটক করলে চলবে না : মির্জা ফখরুল
নয়া দিগন্ত অনলাইন ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:১২

আমরা সংলাপে বিশ্বাস করি, সমাঝোতায় বিশ্বাস করি, আমরা চাই শান্তিপূর্ণ সমাধান। কিন্তু সংলাপের নামে কোন নাটক করা চলবে না। 

মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ সভাপতির বক্ত্যবে এই কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 


মির্জা ফখরুল ইসলাম তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সহ সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন। 

ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল বলেন, রাজশাহীর জনসভার পর তারা ময়মনসিংহ, খুলনা ও কুমিল্লায় যাবেন। এ ছাড়া তারা নির্বাচনের তফসিল পেছানোর দাবিতে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে পদযাত্রা করবেন।

জনসভায় সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমার বক্তব্যের সময় নাই। আমি শুধু আপনাদের সামনে এ কথা বলতে এসেছি, পিজি হাসপাতালের ছোট একটি কক্ষে তিনি (বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া) বন্দি। আমি বিশ্বাস করি জনগণের এই আওয়াজ তার কানে পৌঁছে যাচ্ছে। সেখান থেকে তিনি বলছেন, তোমরা এগিয়ে যাও, জনগণের দাবি আদায় করো।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগে বলেছেন, আমি কারাগারে যেতে ভয় পাই না। গণতন্ত্রের জন্য, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য কারাগারে যেতে প্রস্তুত আছি। আপনারা সবাই একটি জাতীয় ঐক্য গঠন করুন। আজ আমি খুশি একটি ঐক্য গড়ে উঠেছে। সবাই এক মঞ্চে তার (খালেদা জিয়া) মুক্তির দাবি করছেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, একটা প্রহসনের সংলাপ করেছে। বলেছে, আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করবে না। কিন্তু একটু আগেও আমাদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব চলবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আগামীকাল আবার সংলাপে যাব। সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চাই। কিন্তু সংলাপের নামে নাটক বন্ধ করুন। জনগণের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনারা দাবি মেনে নিন।

সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তিসহ সাত দফা দাবিতে ওই জনসভার আয়োজন করা হয়।

জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব। বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরীর এ্যানীর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর আহমেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও মির্জা আব্বাস।

উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, জয়নুল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, ড. সুকোমল বড়ুয়া, আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এমরান সালেহ প্রিন্স ও শামা ওবায়েদ প্রমুখ উপস্থিত হয়েছেন।

এ ছাড়া বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, তকদির হোসেন মো. জসিম, আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ, কামরুদ্দিন এহিয়া খান মজলিস, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান, সহসভাপতি আলমগীর হাসান সোহান, নাজমুল হাসান, জহুরুল ইসলাম বিপ্লব, সহসাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ জনসভায় উপস্থিত রয়েছেন।

এর আগে আজ দুপুর দেড়টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এই সভা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। কোরআন তিলাওয়াত করেন হাফেজ মাওলানা নেসার উদ্দিন। এর পর সদ্য প্রয়াত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

এদিকে সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে জড়ো হতে থাকেন জোটের নেতাকর্মীরা। রাজধানীসহ ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে সমাবেশস্থল মুখর করে রাখেন। তারা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানান।

এ ছাড়া গণসংগীতও পরিবেশন করা হয়। নেতাকর্মীরা ‘বন্দি আছে আমার মা, ঘরে ফিরে যাবে না’, ‘হামলা করে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। তাঁদের হাতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবিসংবলিত ফেস্টুনও দেখা যায়। দেখা যায়, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগানযুক্ত ব্যানারও।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ একাধিক দাবিতে আগামীকাল বুধবার দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

এর আগে গত ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে প্রথম দফার বৈঠক শেষ হলেও সংলাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে গত ৩ নভেম্বর ফের প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দেয় ঐক্যফ্রন্ট।