Sun. Jun 15th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

জালিয়াত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করতে হবে: ভিপি নুর

খােলাবাজার ২৪,বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৯ঃ জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী, জালিয়াত চক্র ও তাদের সহযোগীদের বহিষ্কার দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক।

বুধবার এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত একটি মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে এ দাবি জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী ও তাঁদের সহযোগীদের আজীবন বহিষ্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বুধবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

ডাকসুর ভিপি নুরুল হক, সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন ও তাঁদের সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এতে সংহতি জানায়।

মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে ভিপি নুরুল হক বলেন, শিক্ষার্থীরা জালিয়াতদের বহিষ্কারের যে দাবি জানিয়েছেন, তাতে কোনো কালক্ষেপণ না করে অতি দ্রুত সিনেট-সিন্ডিকেট সভা ডেকে জালিয়াত ও জালিয়াত চক্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করতে হবে। যাঁরা ইতিমধ্যে বের হয়ে গেছেন, তাঁদের সনদ বাতিল করতে হবে, প্রত্যেক জালিয়াতের নাম-পরিচয়সহ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে, যাতে অসৎ উপায়ে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার দুঃসাহস না করেন। তিনি বলেন, ‘উপাচার্য স্যার বলেছেন, জালিয়াতদের শনাক্ত করা হচ্ছে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু চাপে না রাখলে কোনো দাবি আদায় হয় না।’

ভিপি নুরুল হক বলেন, অসৎ উপায়ে জালিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চলছে। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে এলেও প্রশাসন ব্যর্থতা ঢাকতে সব সময় দায়সারা বক্তব্য দিয়েছে, কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো তদন্ত কমিটি জালিয়াতির ঘটনা খুঁজে বের করতে পারেনি, বের করেছেন সাংবাদিকেরা। গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে প্রশাসন প্রথমে বলেছে জালিয়াতি হয়নি বা ওইভাবে প্রশ্নফাঁস হয়নি। কিন্তু ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে তারা সেই বিতর্কিত পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় নিতে বাধ্য হয়েছে। ছাত্রদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিত, সেটা যেখানেই ঘটুক।

গত বছরের অক্টোবরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠলে পরীক্ষা বাতিল করে আমরণ অনশনে বসেন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। তিনিসহ অন্যান্য সংগঠনের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরীক্ষাটি পুনরায় নিতে বাধ্য হয়।

জালিয়াতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে মানববন্ধনে আখতার হোসেন বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রতিবাদে গত বছর আমি একা অনশন করেছিলাম। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শত শত আখতার তৈরি হয়েছে। ঘ ইউনিটের পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় নেওয়ার পাশাপাশি আমি জালিয়াত, জালিয়াতির হোতাদের বহিষ্কার ও ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তাবিধানের দাবি জানিয়েছিলাম। প্রথমটি করা হলেও পরের দাবিগুলোর বিষয়ে প্রশাসনকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, পরিষদ থেকে ডাকসুর জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা রাশেদ খান, এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ফারুক হাসান, স্বতন্ত্র জোট থেকে ডাকসুর ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা অরণি সেমন্তি খান এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা চয়ন বড়ুয়া।

মানববন্ধন শেষে অপরাজেয় বাংলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের কার্যালয়ে যান শিক্ষার্থীরা। জালিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের আজীবন বহিষ্কারসহ কয়েকটি দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন তাঁরা।