Sun. Jun 15th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪, মঙ্গলবার, ১৪মে ২০১৯ঃ অলওয়ার গণধর্ষণ নিয়ে নরেন্দ্র মোদি-মায়াবতীর বাগ‌্‌যুদ্ধ চরমে উঠেছিল। নরেন্দ্র মোদির কটাক্ষ ছিল মায়াবতীর ‘কুমীরাশ্রু’। পাল্টা ইস্তফার দাবি তুলেছিলেন মায়াবতী। এ বার মোদি সরকারকে ‘ডুবন্ত জাহাজ’ বললেন মায়াবতী। জোটসঙ্গী তথা বিজেপির ‘মার্গদর্শক’ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘকেও (আরএসএস) এই মন্তব্যের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে বিএসপি সুপ্রিমোর মন্তব্য, আরএএস-ও সেই জাহাজ ত্যাগ করেছে।

অলওয়ার গণধর্ষণ নিয়ে দু’জনের মধ্যে গরমাগরম আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ চলছিলই। তার মধ্যেই এ বার টুইটারে মোদি তথা বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করলেন মায়াবতী। মঙ্গলবার হিন্দিতে বিএসপি সুপ্রিমো টুইট করেছেন, ‘‘মোদি সরকার ডুবন্ত জাহাজ। এটার প্রমাণ, আরএসএস সেই জাহাজ ছেড়ে দিয়েছে।’’

আম জনতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ টাকা, বছরে দু’কোটি বেকার যুবক-যুবতীর চাকরির মতো বহু প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৪ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, পাঁচ বছর দেশ চালানোর পর সেই প্রতিশ্রুতিরকার্যত কিছুই পূরণ হয়নি। এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলেই মায়াবতীর খোঁচা, ‘‘প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারায় জনসাধারণ ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভের আঁচ পেয়েই বিজেপির হয়ে প্রচারে কোথাও আরএসএস নেতা-কর্মীদের দেখা যাচ্ছে না। আর সেই কারণে মোদিও হতাশ।’’

আদর্শ প্রধানমন্ত্রী কেমন হবেন, সেই নিয়েও এ দিন নিজের মত প্রকাশ করেছেন উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘প্রকৃত প্রধানমন্ত্রী সে-ই, যিনি গণতন্ত্র মেনে দেশ চালাতে পারেন।’’ রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা, মোদি যে গণতন্ত্র মানছেন না, পরোক্ষে কার্যত সেই বার্তাই দিতে চেয়েছেন মায়াবতী।

মায়াবতী নিজে সাধারণত রোড শো করেন না। মন্দিরে পুজো দিতেও খুব একটা দেখা যায় না তাকে। কিন্তু অন্য অনেক নেতা-নেত্রীকেই ভোটের সময় মন্দিরে গিয়ে পুজো দিতে দেখা যায়। সোমবারও উজ্জয়নীতে মহাকাল মন্দিরে পুজো দিয়েছেন কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধী এবং মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। ধারাবাহিক টুইটে নেতা-নেত্রীদের ভোটের সময় এই পুজো দেওয়ার হিড়িক নিয়েও সরব হয়েছেন বিএসপি সুপ্রিমো। তার বক্তব্যের নির্যাস, এই সব পুজো-পাঠের খরচও প্রার্থীর ভোটের খরচের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ নির্বাচন কমিশনের।

লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে পর্যন্ত গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন সময়ে বিজেপি তথা মোদি সরকারের সমালোচনা করে এসেছে আরএসএস। বিজেপির জোটসঙ্গী হয়েও সংগঠনের মুখপত্র সামনাতে নানা সময়ে মোদি-অমিত শাহকে আক্রমণ পর্যন্ত করা হয়েছে। সেই কারণে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটা অংশ মনে করছিলেন, এ বার বিজেপির সঙ্গে জোট নাও করতে পারে আরএসএস। কিন্তু ভোটের দামামা বাজতেই মহারাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপির সঙ্গে আসন সমঝোতা করেই ভোটে লড়ছে আরএসএস। ভোট পরবর্তী জোটের কথা মাথায় রেখেই মায়াবতী এ দিন মোদিকে আক্রমণের পাশাপাশি আরএসএসকেও টেনে এনেছেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।