Thu. Aug 28th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলাবাজার ২৪,শনিবার,০৩আগস্ট,২০১৯ঃ চলতি বছরই ২১ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিউট অব প্লানার্স (বিআইপি)। আজ শনিবার (৩ আগস্ট) সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত ‘ডেঙ্গু, জনসংখ্যা ও আমাদের নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা’শীর্ষক সংলাপে এই তথ্য জানান হয়। একইসঙ্গে ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তারের জন্য অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং সেবার বিকেন্দ্রীকরণ না থাকাকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা।  তারা বলছেন, সেবাদানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার অভাবকেও দায়ী।
এখনই যদি ডেঙ্গুর লাগাম টেনে ধরা না যায় তবে খুব দ্রুতই এ রোগ মহামারি আকার ধারণ করবে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা। সংলাপে একটি অনুসন্ধানি প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দশ বছরে বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বর বেড়েছে নয় গুণ। ২০০৮ সালে ১ হাজার ১৫৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তবে ২০১৮ সালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ১৪৮ জন। তাদের মধ্যে ২৬ জনের মৃত্যু হলে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর রেকর্ড সৃষ্টি হয়।
এছাড়া চলতি বছরের গত সাত মাসেই ২১ হাজার ২৩৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সৃষ্টি হয়েছ নতুন রেকর্ড। ডেঙ্গু রোগের বিস্তৃতির প্রধান কারণ হিসেবে সুষ্ঠু নগর পরিকল্পনার অভাব, সঠিক বর্জ্যব্যবস্থাপনা না থাকা এবং নগর উন্নয়ন আইনের বাস্তবায়নসহ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ডেঙ্গুর বিস্তারে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রয়েছে বলেও জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইনস্টিউট অব প্ল্যানার্স-এর সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘এখনি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব না কমানো গেলে এই রোগ দ্রুতই মহামারি আকার ধারণ করবে।’ঘনবসতি কমাতে হবে উল্লেখ করে পরিকল্পনাবিদ খন্দকার এম আনসার হোসেন বলেন,‘পুরনো ড্রেনেজ পদ্ধতি, অত্যাধিক ঘনবসতি, সরকারের উদাসীনতার কারণে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটেছে।’
পরিকল্পনাবিদ সালমা এ শফি,সচ্ছতার অভাবকে দায়ী করেছেন। অকার্যকর মশার ওষুধ। নতুন ওষুধ ক্রয়ের হিসাব না থাকা, ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নিষ্ক্রয় থাকাকে দায়ী করেন। জোর দেন সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও সেবার বিকেন্দ্রীকরণ করার ওপর।
বিআইপির অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এরমধ্যে নগরীর জনসংখ্যা ও জনঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ করা, পরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়ন নিশ্চিত করা, আবাসিক এলাকায় শিল্পপায়ন বন্ধ করা, নগর এলাকার প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে সবার জন্য ব্যবস্থা করা, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা ব্যয় সকলের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসা, জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা, জনসচেতনা বৃদ্ধি, প্রাককৃতিক উপায়ে মশা নিধনের ওপরে জোর দেওয়া, ড্রেনেজ ব্যবস্থপনা নিশ্চিত করাসহ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিতভাবে কাজ করার সুপারিশ করা হয়।