Thu. Jul 31st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
সুরাইয়া ও সুমাইয়া
খােলাবাজার ২৪,শনিবার,০৫অক্টোবর,২০১৯ঃ  গত কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে দুই যমজ বোনের ছবি। তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে অনুরোধ করেছেন অনেকে।

জানা গেছে, অন্য কোনো মানবিক কারণে নয়, প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান এই দুই তরুণী। সেই স্বপ্ন পূরণে নিজেদের দায়িত্ব যথাযথ পালনও করেছেন তারা।

ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীন ‘গ’ ইউনিটে মেধা তালিকায় স্থানও করে নিয়েছেন দুজনেই।

তবুও তাদের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। স্বপ্ন পূরণের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে টাকা।

জানা গেছে, এই দুই মেধাবী যমজ বোনের নাম সাদিয়া আক্তার সুরাইয়া ও নাদিরা ফারজানা সুমাইয়া।

বাগেরহাটের হরিণখানা গ্রামের মো. মহিদুল হাওলাদার ও শাহিদা বেগমের ঘরে জন্ম তাদের। বাবার আর্থিক অস্বচ্ছলতার মধ্যেও নিজেদের লেখাপড়া চালিয়ে নিয়ে গেছেন। স্থানীয় বিদ্যাপীঠে এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো ফলাফল অর্জন করে এসেছেন ঢাকায়। উদ্দেশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। গ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে মেধা তালিকায় স্থানও করে নেন সুরাইয়া ও সুমাইয়া।

তাদের ক্রম যথাক্রমে ১১৬৩ ও ৮৪৬। এখন অর্থাভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও পড়াশুনা চালিয়ে নেয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা।

নিজেদের উদ্বেগের প্রকাশ করে সাদিয়া আক্তার সুরাইয়া এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা চান্স পেয়েছি। তবে ভর্তি নিয়ে এবং পরের খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। বৃত্তির জন্য আবেদন করেছি, তবে এখনো গ্রহণ করা হয়নি। এছাড়া ভর্তির টাকা ম্যানেজ হয়েছে কিনা তাও জানি না। ৩১ তারিখের মধ্যে আমাদের ভর্তি হতে হবে। অথচ হাতে কোনো টাকাই নেই।’

এজন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দ্বারস্থ হয়েছেন এ দুই বোন।

ফেসবুকে এ দুই বোনে লিখেছেন, আমাদের বাবাএকজন দরিদ্র দিনমজুর, মা গৃহিনী। বড় কোন ভাই নেই। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত টিউশনি করিয়ে পড়াশুনার খরচ জোগাড় করেছি। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় আমরা দুই বোনই জিপিএ-৫ (গোল্ডেন A+) পেয়েছি। আমাদের দুই বোনের স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা। আমরা ভর্তি পরীক্ষায় জয়ী হয়েছি।

ভর্তির শেষ তারিখ ৩১ অক্টোবর। বর্তমানে ভর্তির জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা জোগাড় করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়া পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে এখানে পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যাওয়াও প্রায় অসম্ভব। এজন্য বৃত্তির আবেদন করেছি। তবে এখন পর্যন্ত বৃত্তির ব্যবস্থা হয়নি।

জানা গেছে, ফেসবুকে বিষয়টি প্রকাশের পর তাদের ভর্তির জন্য সহায়তা করতে অনেকেই যোগাযোগ করছেন।

এদিকে ডাকসুর সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার জানিয়েছেন, এ দুই জময বোনের ভর্তির টাকা জোগাড়ের চেষ্টা চলছে।’

আসিফ তালুকদার বলেন, ‘আপাতত আমরা ভর্তির টাকাটা সবার সঙ্গে কথা বলে ম্যানেজ করে দিচ্ছি। তবে ভর্তির পরও তাদের পড়াশুনা চালিয়ে নিতে সমস্যা তৈরি হবে। সে অর্থের যোগানও তাদের অভিভাবকরা দিতে না পারলে আমরা ডাকসুর পক্ষ থেকে তাদেরকে যেসব ধরণের সহযোগিতার প্রয়োজন হবে, তার সবই করব।’

মোবাইল যোগাযোগে কথা হয় সুমাইয়া ও সুরাইয়ার মা শাহিদা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার দুই মেয়ের পড়াশুনায় বেশ আগ্রহী। তারা সব সময়ই ভালো ফলাফল করেছে। আমরা সময়মতো খরচ দিতে না পারলে টিউশনি করে টাকা যোগাড় করে তারা নিজেদের পড়ালেখা চালিয়েছে তারা।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বিষয়টি বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মহোদয় জেনেছেন। তিনি আমার মেয়েদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিসহ পড়াশুনা চালিয়ে নেয়ার জন্য সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

অন্যরকম