Sat. Apr 19th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪,বৃহস্পতিবার,০৬ফেব্রুয়ারি,২০২০ঃ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে আশামনির লাশ উদ্ধারে সক্ষম হন ফায়ার সার্ভিস কর্মীর ডুবুরিরা।

আশামনির লাশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশামনির চাচা বিল্লাল হোসেন।

ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে খালের পানির নিচে জমা আবর্জনার স্তূপ থেকে আশামনির লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা এরশাদ হোসেন।

তিনি বলেন, মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য গত চারদিনে খালের অনেক আবর্জনা পরিষ্কার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা । আজ আমাদের ডুবুরিরা তল্লাশিতে নামলে দুপুরের দিকে তাদের একজনের পায়ে মৃতদেহটি আটকায়।

উল্লেখ্য, গত শনিবার বল কুড়াতে গিয়ে কদমতলীর মেরাজনগরের ডিএনডি খালে তলিয়ে যায় ৫ বছর বয়সী শিশুটি। এর পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা খালে নেমে তল্লাশি চালালেও গত পাঁচ দিন ধরে সফল হননি তারা।

এ কয়দিন কান্নায় বুক ভাসানো বাবা-মা এখন সন্তানের বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দেন। অন্তত লাশ বুকে জড়িয়ে ধরার আকুতি জানাতে আঁচল পেতেছিলেন আশামনির মা তানিয়া।

এবার তার কোলে সন্তান ফিরে এলো তবে লাশ হয়েই।

সন্তানকে না পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে আশামনির মা আকুতি জানিয়েছিলেন, ‘আমাদের আশামণিকে কি শেষ দেখা দেখতে পাব না? আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে দ্রুত আমাদের আশামনিকে উদ্ধার চাই।’

বাবা এরশাদ বলেছিলেন, ‘কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শুকায়া গেছে। আমাদের মেয়ে যে আর বেঁচে নেই তা আমরা জানি। এখন শুধু একটিই চাওয়া– যক্ষের ধনের লাশটা একবার হলেও দেখতে চাই। অন্তত আমার মেয়ের লাশটা খুঁজে দেন আপনারা।’

এদিন সকালে নিখোঁজ আশামনির সন্ধানে ডিএনডি খান সংলগ্ন মেরাজনগর ফারুকের গ্যারেজে দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

মেরাজনগর বায়তুস সালাহ জামে মসজিদ মরহুম হাজী আব্দুল লতিফ জামে মসজিদসহ এলাকার বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও এইচইউসুফ হাইস্কুলের শিক্ষার্থী এলাকার বিভিন্ন শ্রেণির লোকজন এ মোনাজাতে উপস্থিত ছিলেন।

মোনাজাতের পরই দুপুরের দিকে আশামনির মরদেহ খুঁজে পায় ডুবুরিরা।

প্রসঙ্গত শনিবার বিকেল পোনে ৪টায় আশামনি তার মেরাজনগর ডি-ব্লক বাসাসংলগ্ন খালি জায়গায় বন্ধু ফরাজ (৬), আব্দুল্যাহ (৫), রাহিম (৫) এর সঙ্গে ক্রিকেট খেলছিল।

এ সময় পাশে ডিএনডির খালে বল পড়ে যায়। আশামনি বলটি উঠাতে গিয়ে খালের পানিতে ডুবে যায়। এসময় আশামনি আমাকে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুরু করে দেয়।

শিশু ফরাজ আশামনিকে উদ্ধার করতে আশামনিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। এ সময় ফরাজের পা পিছলে যায়। এরই মধ্যে আশামনি ডুবে যায় ও স্রোতে অন্যত্রে চলে যায়। শিশু আব্দুল্লাহর মায়ের কাছে সংবাদ জানায়।

শিশুর মা আসতে আসতে আশামনি নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন খালে নেমেও শিশু আশামনির সন্ধান পায়নি।