Tue. Apr 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪, সোমবার ২২ জুন, ২০২০:  করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট ১ হাজার ৫০২ জন কোভিড রোগী মারা গেলেন।

 এ সময়ের মধ্যে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩ হাজার ৪৮০ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৮৬ জন। আর নতুন সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৭৮ জন।

সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, ৬২টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ হাজার ২৮৭টি নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৫৫৫টি, যাতে ৩ হাজার ৪৮০ জন শনাক্ত হন। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা যেদিন বেশি হয় সেদিন বেশি সংখ্যক মানুষ শনাক্ত হন। গত ১৭ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৯২২জনের নমুনা সংগ্রহ করে একদিনে সর্বোচ্চ ১৭ হাজার ৫২৭টির পরীক্ষায় ৪ হাজার ৮ জন শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পরই এখন বাংলাদেশ। চীনকে ছাড়িয়েছে এ তিনটি দেশই। এ পর্যন্ত ৬ লাখ ২৭ হাজার ৭১৯ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৮৬ জনে। বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান কানাডাকে পেছনে ফেলে ১৭তম। আর এশিয়ার ৪৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। এর আগে রয়েছে ভারত, ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তান ও সৌদি আরব।

নাসিমা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৩৮ জন। গত ১৬ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৫৩ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ১ হাজার ৫০২ জনের। নতুন মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৩৩ ও নারী ৫ জন।

নাসিমা আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বাসা ও হাসপাতাল মিলিয়ে নতুন সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৭৮ জন। এ নিয়ে মোট ৪৬ হাজার ৭৫৫ জন সুস্থ হয়েছেন। ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক নাসিমা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা মোকাবিলায় তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করতে হবে। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাওয়া ও ফুসফুসের ব্যায়াম করা। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এটি ফুসফুসের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।

চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।

ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলে ৩০ মে পর্যন্ত। ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি নেই। এখন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ভিত্তিক লকডাউন চলছে। তাই অফিস আদালতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সরঞ্জামাদি রাখা ও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে।

এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, গত একদিনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৩৩৮ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ। সোমবার সকাল পর্যন্ত করোনায় বিশ্বব্যাপী নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭০ হাজার ৬৬৫ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮১ জন। অপরদিকে ৪৮ লাখ ৩৭ হাজার ৯৫২ জন করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন।

চীনের উহান থেকে শুরুর পর ইউরোপে তাণ্ডব চালায় প্রাণঘাতী এ ভাইরাস। এখন এর কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে রাশিয়া, ব্রাজিল।

আক্রান্ত ও নিহতের সংখ্যায় সবার ওপরে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৫৭৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৯৮০ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৯ লাখ ৭২ হাজার ৯৪১ জন।

আক্রান্ত ও মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ৮৬ হাজার ৯৯০ জন, মৃত্যু হয়েছে ৫০ হাজার ৬৫৯ জনের। রাশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৮০ জন, মৃত্যু হয়েছে ৮১১১ জনের।

আক্রান্তের দিক দিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ২৬ হাজার ৯১০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ৭০৩ জনের।

আক্রান্তের দিক দিয়ে পঞ্চম এবং মৃত্যুর দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ব্রিটেনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৪ হাজার ৩৩১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪২ হাজার ৬৩২ জনের।