Sun. Jun 8th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪,সোমবার,১৫ র্মাচ ২০২১ঃ মিয়ানমারে সামরিক সরকার বিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে গত একদিনেই ৩৯ বিক্ষোভকারী নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শুধু হ্লাইংথায়ায় ২২ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া দেশটির অন্যান্য শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। আর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন একজন পুলিশ সদস্যও।

রোববার (১৪ মার্চ) দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।

স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে লন্ডন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

অ্যাডভোকেসি গ্রুপ অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসের (এএপিপি) বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এদের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া দেশটির অন্যান্য শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। আর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন একজন পুলিশ সদস্যও।

দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, শিল্প এলাকা হ্লাইংথায়ায় চারটি গার্মেন্টস কারখানা ও একটি সার কারখানায় আগুন দেওয়া হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি সেদিকে যেতে চাইলে বিক্ষোভকারীরা বাধা দেয়। প্রায় দুই হাজার বিক্ষোভকারী ফায়ার সার্ভিসের পথ বন্ধ করে দেয়।

সংঘর্ষের পর সামরিক সরকার চীনা কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকা এলাকাটিতে মার্শাল ল জারি করেছে।

চিকিৎসাকর্মীদের বরাতে খবরে বলা হয়েছে, নিরাপত্তাবাহিনী রাবার বুলেট ও তাজা গুলি ছোড়ে। এতে অন্তত ৩৯ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার নাউ ওয়েবসাইট। তবে স্থানীয় অপর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে নিহতের সংখ্যা আরও বেশি বলে দাবি করা হচ্ছে।

চীনের দূতাবাস মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে তাদের সম্পত্তি ও নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। চীন অর্থায়ন করা দুটি পোশাক কারখানায় অজ্ঞাত হামলাকারীরা আগুন দেওয়ার পর এই আহ্বান জানানো হয়।

এর আগে গত ৩ মার্চ একদিনে ১৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন। এতদিন জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে একদিনে ওটাই ছিল সর্বোচ্চ প্রাণহানির ঘটনা।

গত মাসে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে চলমান আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ১২৬ জনের বেশি মানুষের নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী।

অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি পার্টির (এনএলডি) নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্যদের মধ্যে যারা গ্রেফতার এড়িয়ে আত্মগোপন করতে সক্ষম হয়েছেন তারা একটি নতুন গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেছেন। এর নাম কমিটি ফর রিপ্রেজেন্টিং পাইডাংসু লুত্তাও বা সিআরপিএইচ। মান ‍উয়িন খাইং থান এর অস্থায়ী প্রধান নিযুক্ত হয়েছেন।

সিআরপিএইচ মিয়ানমারের বৈধ সরকার হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

শনিবার গোপন অবস্থান থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে দেওয়া ভাষণে খাইং থান বলেন, এটি জাতির সবচেয়ে অন্ধকার মুহূর্ত কিন্তু নিকটেই ভোর।

সিআরপিএইচ মিয়ানমারে একটি ফেডারেল গণতন্ত্র তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে। এর নেতারা দেশটির বৃহত্তম নৃগোষ্ঠীগুলোর সশস্ত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করছে এবং ইতোমধ্যে কিছু গোষ্ঠী সিআরপিএইচের প্রতি সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।