Mon. Apr 7th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪, বৃহস্পতিবার ,২৫ র্মাচ ২০২১ঃ  সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘু হিন্দুদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট ঘটনায় সরকারি দলের লোকেরাই দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

নোয়াগাঁও পরিদর্শনের প্রত্যক্ষ বিবরণ তুলে ধরে ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘ওই গ্রাম আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত, ওই গ্রামে শুধু সজল সরকার নামে একজন বিএনপির লোক আছেন বলে স্থানীয়রা ও আওয়ামী লীগের লোকজন আমাকে বলেছেন। ঝুমন দাস বিএনপি করে- এটা স্থানীয় আওয়ামী লীগ জানে না, তারা নাকি প্রথম এ কথা পত্রিকা মারফত শুনেছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রশাসনও হামলার সব জানতো। প্রশাসন তাদের আশ্বস্ত করে বলেছিল হামলা হবে না। তাই গ্রামবাসী পালিয়ে যায়নি। তবু হামলা হয়েছে। এই ঘটনা আমি খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করেছি। এই কাজে মসজিদের তিনটি মাইক ব্যবহার করা হয়েছে। মসজিদের উপর কর্তৃত্ব কাদের থাকে? সরকারি দলের থাকে।’

ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘এলাকাটি খুবই প্রত্যন্ত অঞ্চল। আমরা সেখানে গিয়েছি। সেখানের মানুষের দারিদ্র্যতা দেখে বুঝেছি দারিদ্র্যতা কতো কঠিন। এক-দেড় রুমের খুপড়িতে তারা বাস করে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে যা অকল্পনীয়।এত দিন থাকতে ১৭ মার্চ কেন তারা বেছে নিলো? বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে কেন বেছে নিয়েছে? কারা বেছে নিয়েছে? সরকারদলের কর্মীরা। বেছে বেছে এই দিনটাকেই তারা এই কাজটি করেছে,’ বলেন তিনি।

ওই দিনের হামলায় সরকারের প্রশাসন নির্লিপ্ত থাকার অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সেখানের ১১ জন মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎ পেয়েছি। যাদের মধ্যে ১০ জন সংখ্যালঘু এবং একজন মুসলিম মুক্তিযোদ্ধা। স্থানীয় এই ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা আমার কাছে অভিযোগ করেছেন, হামলার বহু আগে তারা ইউএনওকে জানিয়েছেন এবং সাহায্য চেয়েছেন। কিন্তু তাদের ইউএনও সাহায্য তো করেইনি বরং ফোনে ওই সময় দুর্ব্যবহার করেছেন।’

এ সময় সংখ্যালঘুদের উপর নিযর্যাতন বন্ধে ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী চারটি প্রস্তাব দেন। এগুলো হলো-
১. হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০ পরিবারের জন্য বাড়ি নির্মাণ।

২. একজন বিচারপতি, সাবেক আইজিপি নুর মোহাম্মদ ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা এম করিমের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন।
৩. শেখ রেহেনাকে প্রধান করে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন। এবং
৪. মসজিদের মাইক ধর্মীয় কাজ ছাড়া কোনো রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার না করা।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নঈম জাহাঙ্গীর, রাষ্ট্রচিন্তার চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, প্রাণী গবেষক এনাম আল হক, ব্যারিষ্টার সাদিয়া আমিন প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ফেসবুকে উস্কানিমূলক পোস্ট দেয়ার অভিযোগে গত ১৭ মার্চ সকালে শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা চালিয়ে মন্দির ও বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও আসবাবপত্র তছনছ করে হামলাকারীরা। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে শাল্লা থানা পুলিশের এসআই আব্দুল করিম বাদি হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় কয়েক শ’জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ছাড়া হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বাদি হয়ে ৮০ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন