Wed. Aug 27th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

১৬ মে খোলা বাজার অনলাইন ডেস্ক : বদলীর আদেশ ৫ দিনের মাথায় স্থগিত : দুর্নীতি অনিয়ম  ঢাকতে থাকেন  ঢাকায় , বরিশাল সিটির সরকারি মাহমুদিয়া  প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেই  বিতর্কিত  প্রধান শিক্ষকের বদলির আদেশ পাচঁদিনের মাথায় কোন অপশক্তির ইশারায় বাতিল করা হলো তার খুটির জোর কোথায়, রুপের জাদুই কি তার আসল খটি, এ প্রশ্ন এখন গোটা বরিশাল জুড়ে ।

বরিশাল নগরীর ৮৩নং মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক  মোসাঃ মাহমুদা খাতুনকে ৮ মে বরিশাল সদরের নরকাঠিতে বদলির আদেশ প্রদান করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর  প্রশাসনিক কারন দেখিয়ে। এই আদেশের পরে ১৪ মে মাহমুদা খাতুন তার বদলী আদেশ স্থগিত করান। আদেশ বাতিলের খবর বরিশালে পৌছলে শিক্ষার্থী,অভিভাবক,ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও স্থানীয়দের মধ্য তীব্র প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তোলপাড় ঘটে প্রাথমিকের উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় অফিসে। বেপরোয়া বিতর্কিত এই প্রধান শিক্ষকের রুপের জাদুতে তিনি পাচঁ বিয়ে করেন। এই বেপরোয়া বিতর্কিত প্রধান শিক্ষকের পক্ষে অনেক কিছুই সম্ভব বলে জানিয়েছেন টিও অফিসের একজন।

মাহমুদা খাতুন ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে বিদ্যালয়টিতে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই বিদ্যালয়ে অনিয়মিত আসা-যাওয়া, দায়িত্বে অবহেলা, স্বেচ্ছাচারিতা, শিক্ষকদের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পরা, অভিভাবক ও এস এম সির সাথে উশৃঙ্খল আচরণ ইত্যাদি বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত হন। এসব সমস্যার কথা স্কুল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় কর্মকর্তাদের মৌখিকভাবে জানালে কর্মকর্তারা তাকে সতর্ক করেন। কিন্তু তার কার্যকলাপে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন হয়নি বরং তিনি আরও স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেন।উৎশৃংল কর্মকান্ডের জন্য সবাই বিব্রতকর অবস্থায়।

২০২২ সালের ৬ এপ্রিল  স্কুল ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি সাইদুল হক পলাশ বরিশালের বিভাগীয় উপ-পরিচালক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা-এর বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ১ জুন ২০২২  তারিখে একজন উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি টিম তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সেই তদন্তের প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয় যে মোসাঃ মাহমুদা খাতুন একজন অদক্ষ প্রধান শিক্ষক যার দ্বারা মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মত অধিক সংখ্যক ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের পরিচালনা করার সক্ষমতা নেই।

তদন্ত কমিটির তদন্তের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে বরিশালের তৎকালীন উপ-পরিচালক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ মাহমুদা খাতুনকে অন্যত্র একটি ছোটো স্কুলে বদলি করার জন্য মহাপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা বরাবরে সুপারিশ করেন। কিন্তু তা পরবর্তীতে  আর আলোর মুখ দেখেনি।মোসাঃ মাহমুদা খাতুন এর পূর্বে আরও দুটো বিদ্যালয় একই ঘটনা ঘটিয়ে স্থানীয় জনরোষের শিকার হয়ে স্কুল ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন এমনকি তার নামে বিভগীয় মামলাও হয়েছিলো। মোসাঃ মাহমুদা খাতুনের  উশৃঙ্খলতা আর অনিয়ম বেড়ে যায় কয়েকগুন। তিনি কোনো নিয়ম নিয়মনীতির তোয়াক্কাই করেন না।

পরবর্তীতে তার নামে বরিশাল উপজেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার এবং উপ-পরিচালক বরিশাল বরাবরে পুনরায়  অভিযোগ  দায়ের করা হয় এমন কি তার স্বেচ্ছাচারিতার  বিভিন্ন দিক তুলে ধরে একটি টিভি চ্যানেল সংবাদ প্রকাশ করলে তার সুত্র ধরে উপ-পরিচালক, বরিশাল তদন্ত শুরু করেন এবং তার দায়িত্বহীনতার চিত্র প্রমানিত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে উপ-পরিচালক বরিশাল গত ১৩ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মহাপরিচালকের বরাবরে মোসাঃ মাহমুদা খাতুনকে  প্রশাসনিক কারণে বদলির প্রস্তাবনা পাঠান। গত ৮ মে ২০২৩ মোসাঃ মাহমুদা খাতুনকে  বদলির আদেশ দেন। বদলির আদেশের খবর পেয়ে অভিভাবক, স্কুল কর্তৃপক্ষ, এমন কি স্থানীয় শিক্ষা প্রশাসনও স্বস্তি লাভ করেন।

কিন্তু ১৪ মে ২০২৩ আরেকটি আদেশ বলে মোসাঃ মাহমুদা খাতুনের বদলির আদেশ বাতিল করা হয়; যা শুনে সবাই হতবাক হন। কোন অদৃশ্য ইশারায় একজন মহাপরিচালকের  স্বাক্ষরিত  আদেশ বাতিল হতে পারে যা বরিশালে এখন আলোচনার  কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এতে স্থানীয় শিক্ষা প্রশাসনের  আদেশ  নির্দেশ পড়েছের হুমকির মধ্যে ।

এভাবে বিচারিক প্রক্রিয়া বিলম্বিত হতে থাকলে এবং কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকলে শিক্ষায় সুশাসন ভূলুন্ঠিত হতে বাধ্য বলে জানান শিক্ষাবিদ  ছাইদুল হক পলাশ। এ ব্যাপারে স্থানীয় রিয়াজ হোসেন,ফাতেমা বেগম, ছালমা আক্তার অনতিবিলম্ভে বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক মাহমুদাকে দ্রুত বদলী ও কঠোর শাস্তি প্রদানের  দাবী জানান।

তাকে বদলী না করা হলে কঠোর আন্দোলনের  হুমকিও প্রদান করেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। এ ব্যাপারে  মাহমুদাকে  কল করা হলে তিনি  সব  অভিযোগ  অস্বিকার  করেন।