Thu. Oct 23rd, 2025
Advertisements

32বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইন-২০০৬ এর (সংশোধনী ২০১৩) ৫৭ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ নিয়ে হাইকোর্টে দায়ের করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। তবে এ বিষয়ে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী শিশির মনির।

বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে ২৬ আগস্ট বিকেলে এ আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হয়ে পরবর্তী সময়ে জামিনে থাকা জাকির হোসেনের পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি দায়ের করেন আইনজীবী শিশির মনির।

আইসিটি এ্যাক্টের ৫৭ ধারায় বলা রয়েছে, ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কোনো ব্যক্তির তথ্য যদি নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ করে, এতে যদি কারো মানহানি ঘটে, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়, তা হবে অপরাধ। এর শাস্তি অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক এক কোটি টাকা জরিমানা।
এ ছাড়া ৪৬ ধারায় বলা আছে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, নিরাপত্তা কিংবা কোনো বিদেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নস্যাতের মতো কোনোকিছু প্রকাশ হলে সে তথ্য সম্প্রচারে বাধা দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারবে নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ।
৭১ ধারায় অভিযুক্তদের জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে সাইবার ট্রাইব্যুনালকে শর্ত বেধে দেয়া হয়েছে।
রিটে আইন সচিব, তথ্য যোগাযোগ সচিব ও প্রযুক্তি সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিট দায়েরের দিন শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ কারাদণ্ড ১৪ বছর ও এক কোটি টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। অথচ একই অভিযোগে পর্নোগ্রাফি আইনে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা জরিমানার কথা বলা হয়েছে। এটি সরাসরি বৈষম্য।’
আইসিটি এ্যাক্টের ৫৭ ধারাটি সংবিধানের ২৭, ৩১, ৩২ ও ৩৯ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক হওয়ায় ধারাটি চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করা হয়েছে’ উল্লেখ করেন শিশির মনির।

তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, আইনের চোখে সকলে সমান এবং ৩৯ অনুচ্ছেদে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ৫৭ ধারাটি সাংঘর্ষিক।’
ওই আইনের ৫৭(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হয়, তাহা ইহলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ।’
‘কোনো ব্যক্তি উপধারা (১)-এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি অনধিক ১৪ বছর এবং অন্যূন সাত বছর কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’