খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫
ভয়-ডরহীন ক্রিকেটই এই মুহূর্তে ভারতীয় দলের মূলমন্ত্র। শ্রীলঙ্কা সফরে এই আক্রমণাত্মক ঘরানার ক্রিকেট খেলেই সফল তারা। তবে অতি-আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে মাঠের আচরণে গুবলেট পাকিয়ে ফেলছেন দলটির তারকা ক্রিকেটাররা। অতি-আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের প্রভাব এতটাই প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে যে ভারতীয় সাবেকেরাও একে ‘অভব্য আচরণ’ হিসেব বলতে কুণ্ঠাবোধ করছেন না। শ্রীলঙ্কায় শেষ টেস্টে ‘আগ্রাসী’ আচরণে যে বাড়াবাড়ি করেছেন সে জন্য ইশান্তকে মাথা পেতে নিতে হয়েছে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু ভারতীয় দলের টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী এতে দমছেন না। শাস্তি হলেও ইশান্তের আগ্রাসন বরং তাঁর কাছে সঠিক বলেই মনে হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি সবাইকে খানিকটা অবাকই করেছেন, ‘আমি বরং ইশান্তকে আরও আগ্রাসী ও আক্রমণাত্মক হতেই বলব।’ আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলেই হোক কিংবা ঘটনাক্রমে দুর্বল শ্রীলঙ্কাকে পেয়েই হোক, দুই দশক পরে শ্রীলঙ্কা থেকে টেস্ট সিরিজ জিতে ফিরেছে ভারত। পরিচালক শাস্ত্রী দলের পারফরম্যান্সে দারুণ খুশি। আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে দলের মনোভাব যেন এ রকম ‘আক্রমণাত্মক’ থাকে, শাস্ত্রীর চাওয়া এটাই। আগ্রাসী ক্রিকেটটাও যে সীমার মধ্যে থেকে খেলা যায় শাস্ত্রী জানিয়েছেন সেটাও। ইশান্তের প্রসঙ্গে শাস্ত্রীর অবশ্য একটু সমালোচনাও আছে। তিনি মনে করেন আগ্রাসী হতে গিয়ে ইশান্ত একটু সীমার বাইরেই চলে গিয়েছিল, ‘এই আচরণের জন্য ইশান্তকে যথেষ্ট সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছে। আমিও মনে করি সে একটু সীমার বাইরেই চলে গিয়েছিল। তবে আমি আগ্রাসী ক্রিকেটের পক্ষে। আমি তাঁকে আগ্রাসনের সীমাটা দেখিয়ে দিয়ে বলব, আরও আক্রমণাত্মক হও।’ সামনেই দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে ভারত। টেস্টে এক নম্বর দলের মুখোমুখি হওয়ার আগে কেবল আক্রমণাত্মক মনোভাবকেই অস্ত্র মানছেন না শাস্ত্রী। মূল অস্ত্র হিসেবে ধারাবাহিকতার ওপরও জোর দিচ্ছেন তিনি। চার টেস্টের এই সিরিজের আগে নিজেদের কর্তব্যটাও ঠিক করে নিয়েছেন তিনি, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বের এক নম্বর দল। তাঁদের চাপে ফেলতে হলে টানা ভালো খেলতে হবে। তবে আমাদের মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হবে না। অস্ট্রেলিয়া এবং শ্রীলঙ্কা সফরেই বোঝা গেছে কেবল ধারাবাহিকতাই ছিল জয়ী এবং পরাজিত দলের মধ্যকার পার্থক্য।’ দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে বেশ দীর্ঘ এক সিরিজ খেলবে ভারত। চারটি টেস্টের পাশাপাশি পাঁচটি ওয়ানডে এবং দুইটি টি-টোয়েন্টিও আছে এই সফরে। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলের সঙ্গে পেরে উঠতে চাইলে ধারাবাহিকতা এবং আগ্রাসনের পরিপূর্ণ মিলন ঘটাতে হবে ভারতীয় দলকে। শ্রীলঙ্কা সফরেই ভারত দেখিয়েছে আগ্রাসনের কমতি নেই তাঁদের, কিন্তু ধারাবাহিকতা তারা কতটুকু অর্জন করতে পারে, দেখার বিষয় এটিই।