খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় ছেলের সামনে মাকে নির্যাতনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে তিনজন নিহত হবার পর তাদের লাশ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় সেখানে দায়িত্ব পালনরত পুলিশের সব সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান শনিবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, কেন কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, কেনই বা গুলি করার প্রয়োজন হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লার রহমান বলেন, গুলি করার যৌক্তিকতা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় পুলিশের গুলিতে নিহত তিন জনের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। বাড়ি বাড়ি কান্নার রোলে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে রয়েছে। ময়নাতদন্ত করার পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গুলিতেই মারা গেছেন তারা। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসছেন মানুষ। নিহত ৩ জনের একজন শামীমের মা আমেনা খাতুন বলেন, জুমার নামাজ পড়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন শামীম। এরপর আর ফিরে আসেননি। তিনি বলেন, আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই। কালিহাতির ঘটনা তদন্ত ও সেখানে দায়িত্ব পালনকারীদের দায়-দায়িত্ব নিরূপণের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আইজিপি মো. মোখলেছুর রহমানের নির্দেশে অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আলমগীর আলমকে সভাপতি, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আক্তারুজ্জামান এবং টাঙ্গাইল জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসলাম খানকে সদস্য করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এদিকে কালিহাতিতে গ্রেফতারের ভয়ে অনেকে ভয়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। ঈদের আগে এধরনের ঘটনায় কালিহাতির পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশ শনিবার দুপুরে নিহত ৩ জনের লাশ হস্তান্তর করলে বিকেলে দু’জনের জানাযার পর তাদের দাফন করা হয়েছে। নিহত আরেক ব্যক্তি শ্যামলের লাশ সৎকার করা হয়।