খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গত দুদিনের বিভিন্ন ঘটনায় রাজনীতিতে বেশ ঝড়ো হাওয়া বইছে। রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দিতে সোমবার প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে মিছিল করেছে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা। এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিধানসভার অধিবেশনে নকল পিস্তল নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বাম দলের বিধায়করা। বাম ও কংগ্রেসের বিধায়করা ওয়াকআউট করেছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেছেন, পিস্তল নিয়ে মিছিল করার পর এই রাজ্যকে সন্ত্রাসী রাজ্য হিসাবে ঘোষণা করা উচিৎ। আর খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজ দলের পিস্তলধারী কর্মীদের ব্যাপারে কোনও উ”চবাচ্য না করে উল্টো বিধানসভায় নকল পিস্তল নিয়ে বিক্ষোভ করার দায়ে বাম দলের বিধায়কদের গ্রেফতার করা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন। খবর আজকাল ও আনন্দবাজার পত্রিকার। মঙ্গলবার রাজ্য বি জে পি সভাপতি রাহুল সিন্হা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর উচিত কান্দির ঘটনার জন্য মুর্শিদাবাদের এস পিকে বরখাস্ত করা। তাঁর মন্তব্য, ‘সোমবার কান্দিতে পিস্তল উঁচিয়ে তৃণমূল কর্মীরা দলীয় সভায় যাচ্ছিলেন। রাজ্যের ভবিষ্যৎ কোথায় যাচ্ছে, তা অনুমেয়। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে যেখানে তৃণমূল কর্মীরা প্রকাশ্যে রাস্তা দিয়ে মিছিল করে যেতে পারে, সেই রাজ্যকে সন্ত্রাসবাদী রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। নিজের দলের লোকেরা যখন অস্ত্র নিয়ে মিছিল করে, তখন তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। কিন্তু বিরোধীদের মিথ্যে অস্ত্র মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়। যারা সোমবার অস্ত্র নিয়ে মিছিল করেছে, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হোক।’ এদিকে দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, পিস্তল হাতে তৃণমূলের মিছিলের প্রতিবাদ জানাতে বিধানসভায় খেলনা পিস্তল নিয়ে ঢুকে বিক্ষোভ দেখালেন বাম বিধায়কেরা। এজন্য তাঁদের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করল শাসক পক্ষ। এমনকী, বাম বিধায়কদের গ্রেফতার করা উচিৎ বলে হুঁশিয়ারি দিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার বিধানসভার অধিবেশন বসতেই বাম বিধায়কেরা আচমকাই নকল পিস্তল নিয়ে হইচই জুড়ে দেন। বাম বিধায়কেরা নকল পিস্তল উপরে তুলে ধরে বলতে থাকেন, ‘‘রাজ্যে আইনের শাসন বলে কিছুই নেই। প্রকাশ্য রাস্তায় পিস্তল নিয়ে মিছিল করেও পার পাওয়া যায়।’’ নকল পিস্তল থেকে এই সময় ফট ফট করে ‘গুলি’র শব্দ শোনা যাচ্ছিল। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় আর্তনাদ করে ওঠেন, ‘‘এ সব কী হচ্ছে! এগুলো আসল না নকল? কিছুই বোঝা যাচ্ছে না! দয়া করে এগুলো সরান।’’ বাম বিধায়কেরা অবশ্য সেই অনুরোধে কান না দিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে থাকেন। এর পরই মার্শালকে ডেকে বিধায়কদের ওই খেলনা পিস্তলগুলো বাজেয়াপ্ত করে নেন স্পিকার বিমানবাবু। শেষদিকে হঠাৎই সভায় প্রবেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জিরো আওয়ারের পরে মুখ্যমন্ত্রীকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘ভাগ্যিস এমন একটা বিক্ষোভের সময় আমি সভায় ছিলাম না। এটা অসৌজন্য, অশোভনীয়ই শুধু নয়, গণতন্ত্রের কলঙ্কজনক দিন। এ ভাবে অস্ত্র নিয়ে যারা বিক্ষোভ করেছে, তাদের গ্রেফতার করা উচিত।