খোলা বাজার২৪,মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর ২০১৫
বাংলাদেশে দুই বিদেশিকে হত্যার সঙ্গে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) নয়, জামায়াতে ইসলামীর ‘বিদ্রোহীরা’ জড়িত থাকতে পারে। ভারতের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এমন দাবি করেছেন। দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ কথা জানিয়েছে। ভারতের গোয়েন্দাদের মতে, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের কয়েকজন নেতাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মতিউর রহমান নিজামীসহ জামায়াতের আরো কয়েকজন শীর্ষ নেতার মৃত্যুদণ্ড বাস্তবায়নের পথে আছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই জামায়াত বিদেশি হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে। ভারত সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের কার্যক্রম আছে বিশ্বজুড়ে। জামায়াত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে চরমপন্থীদের সম্পৃক্ত করছে, যেন এটি আইএসের কাজ। এটি তাৎক্ষণিকভাবে পশ্চিমা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। জামায়াতের পরবর্তী পরিকল্পনা হতে পারে—শেখ হাসিনার সরকারকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হিসেবে দেখানো। ভারতের আরেক কর্মকর্তা বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা মনে করে, বাংলাদেশে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আইএসের কর্মকাণ্ড মেলে না। শিকারের শিরñেদ ও ভিডিওচিত্র তোলা আইএসের হত্যাকাণ্ডের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। কিন্তু বাংলাদেশে ঘটনা দুটিতে গুলি চালানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত আইএসের সঙ্গে তাঁদের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, আটকরা হয়তো প্রকৃত অপরাধী নয়, কিন্তু অপরাধীদের ধরতে তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত এমন কোনো সূত্র পাওয়া যায়নি, যা আইএসের দাবিকে সমর্থন করে। অন্য এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘একমাত্র যে ব্যাখ্যাটি পাওয়া যায় তা হলো, জামায়াত সংশ্লিষ্টতা। দলটি নিজ ভূমিতে বিদেশি হত্যার মাধ্যমে হাসিনা সরকারকে আঘাত করছে। এর কারণ হতে পারে হাসিনা সরকারকে পেছনে ফেলা। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গ্রহণযোগ্যতার লক্ষ্যে দলটি কয়েক বছর ধরে নিজেদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।’ গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার গুলশানে চেসারে তাভেলা (৫০) নামের ইতালির এক নাগরিককে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি গুলশানে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ছিলেন। এর মাত্র কদিন পর রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জে জাপানের নাগরিক হোশি কুনিওকে হত্যা করে একদল দুর্বৃত্ত। দুটি হত্যাকাণ্ডের পর আইএস পরিচয়ে দায় স্বীকার করে বিবৃতি পাওয়া যায়।