খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৫, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম : চন্দনাইশে জায়গা জমির বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত মোহাম্মদ রেজাউল করিম (৩৫) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। এদিকে হামলাকারীরা রেজাউল করিমের পরিবারের সদস্যদের নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। রেজাউলের পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এলাকায় অবস্থান করতে পারছেন না ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা। হামলাকারীরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার গাড়ি ওয়ালা পুকুরের পশ্চিম পাড়ে প্রতিপক্ষের লোকজন রেজাউলের উপর এ হামলা চালায়। এ ব্যাপারে রেজাউলের পিতা মনিরুল আলম বাদি হয়ে ১৪ জনকে আসামী করে চন্দনাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রেজাউলকে দেখতে গিয়ে স্থানীয় এমপি নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
থানায় দায়েরকৃত মামলা সুত্রে জানা যায়, জায়গা জমির বিরোধের জের ধরে রেজাউলের পিতা মনিরুল আলমের সাথে স্থানীয় মো. জহুরুল আলম গংয়ের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাজার করে বাড়িতে আসার পথে গাড়ী ওয়ালা পুকুরপাড়ে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী রেজাউল করিমের উপর লাঠিসোটা, দা, কিরিচ, ছুরি ও লোহার রড নিয়ে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা রেজাউলকে হত্যার উদ্দেশ্যে কিরিচ দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এ সময় তার আর্তচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চন্দনাইশ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশংকাজনক দেখে চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বর্তমানে রেজাউল করিম চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় রেজাউল করিমের পিতা মনিরুল আলম বাদি হয়ে উপজেলার বৈলতলী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মৃত কবির আহমদের ছেলে মো. জহুরুল আলম (৫৫), তার ছেলে যথাক্রমে আবদুল মান্নান (৪০), নুরুল কবির (৩০), হাসান কবির (২৮), মোহাম্মদ হোসেন (২৫), মৃত আবদুল মালেকের ছেলে আবদুল হান্নান (৩৫), শহিদুল ইসলাম (৩০), মোহাম্মদ মুন্না (২৫), মৃত ইন্না আমিনের ছেলে জাহেদ হোসেন (৫০), জাহেদ হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ জাবেদ (২৭), মোহাম্মদ সাজ্জাদ (২০), মৃত এলো মিয়ার ছেলে আবু ছৈয়দ (৪৫), মৃত সামশুল আলমের ছেলে মোহাম্মদ ইমন (২০), মোহাম্মদ লিমন (১৮)সহ ১৪ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদি মনিরুল আলম জানান, মামলার বিবাদীরা তাকেসহ পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার নানাভাবে হুমকি প্রদান করছে। তিনি সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চন্দনাইশ থানার এসআই মোহাম্মদ আবদুল আলীম জানান, হামলার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য সন্ত্রাসী হামলায় আহত রেজাউল করিম এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টান ও সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত। তিনি বর্তমানে দক্ষিণ জাফরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আরব সিকদার জামে মসজিদ পরিচালনা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।