খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৫ : বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার সনদের মেয়াদ তিন বছর করা হয়েছে। বর্তমানে এ সনদের মেয়াদ আজীবন। একই সঙ্গে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পাস নম্বর হবে ৪০।
নতুন নিয়মে আগে থেকেই উপজেলা পর্যায়ের বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা থেকে শিক্ষকের চাহিদা সংগ্রহ করবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এরপর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের উপজেলা, জেলা এবং জাতীয়-ভিত্তিক মেধাক্রম অনুসারে ফলের তালিকা প্রকাশ করবে তারা।
‘বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা, ২০০৬’ সংশোধন করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২১ অক্টোবর শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত বিধিমালার সংশোধন প্রকাশিত হয়েছে।
নতুন এ ব্যবস্থার কারণে শিক্ষক নিয়োগে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির ক্ষমতা খর্ব হল।
বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের নতুন পদ্ধতির বিষয়ে ১৪ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এসব বিষয়ের সঙ্গে মন্ত্রী এনটিআরসিএ’র পরিবর্তে শিক্ষক নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলেন। কিন্তু বিধিমালার সংশোধনে কমিশনের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
সংশোধিত বিধিমালায় বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর নভেম্বর মাসের মধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে জেলার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পদ ও বিষয়ভিত্তিক শূন্যপদের তালিকা সংগ্রহ করবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তালিকা প্রণয়ন করে অক্টোবর মাসের মধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে দাখিল করবেন। জেলা শিক্ষা অফিসার এ তালিকার সঠিকতা যাচাই করে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবে। কর্তৃপক্ষ এ তালিকার ভিত্তিতে পরীক্ষা নেবে।
বর্তমানে কোনো চাহিদা ছাড়াই কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নেওয়া হয়।
সংশোধনের আদেশে বলা হয়েছে, আবশ্যিক বিষয়গুলোতে এমসিকিউ (বহু নির্বাচনী) পদ্ধতিতে প্রার্থীদের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রিলিমিনারি টেস্টে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ঐচ্ছিক বিষয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। ঐচ্ছিক বিষয়ে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
কর্তৃপক্ষ এলাকা, বিষয় ও পদভিত্তিক শিক্ষকের শূন্যপদের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী ঐচ্ছিক বিষয়ে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীর সংখ্যা নির্ধারণ করবে।
প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১০০-এর মধ্যে ন্যূনতম পাস নম্বর হবে ৪০। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের উপজেলা, জেলা এবং জাতীয়-ভিত্তিক মেধাক্রম অনুসারে ফলের তালিকা প্রকাশ করা হবে। তবে কোনো প্রার্থী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় আলাদাভাবে ১০০ নম্বরের মধ্যে কমপক্ষে ৪০ নম্বর না পেলে তিনি কোনো মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন না।
উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মেধাভিত্তিক মূল তালিকা ছাড়া শূন্যপদের সংখ্যার শতকরা ২০ ভাগ প্রার্থীর সমন্বয়ে অপেক্ষমাণ তালিকা প্রণয়ন করা যাবে। মৃত্যু, চাকরি ত্যাগ, অনিচ্ছুক প্রার্থী বা অন্য কোনো কারণে পদ শূন্য হলে এ তালিকা থেকে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যাবে বলে বিধিমালায় বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ প্রিলিমিনারির ফল পরীক্ষা নেওয়ার ২০ দিনের মধ্যে প্রকাশ করবে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে এ সময় আরও ১০ দিন বেশী হতে পারে। ঐচ্ছিক বিষয়ে লিখিত পরীক্ষার ফল পরীক্ষা গ্রহণের ৪৫ দিনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে সময় আরও ১৫ দিন বৃদ্ধি করা যাবে। মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।
প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনর্নিরীক্ষণ বা পুনর্পরীক্ষণের কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না। এ সংক্রান্ত কোনো তথ্যও দেওয়া হবে না বলেও সংশোধিত বিধিমালায় বলা হয়েছে।
এ ছাড়া পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষ উত্তীর্ণ প্রার্থীদের শিক্ষক নিবন্ধন রেজিস্টারে বা ডাটাবেজে নিবন্ধন করবেন ও তিন বছর মেয়াদী প্রত্যয়নপত্র দেবেন।