খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২ ডিসেম্বর ২০১৫ : শুনানিতে অপরাধ স্বীকার করেননি বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব। তিনি বলেন, অপরাধ প্রমাণিত হলেও বয়স বিবেচনায় মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমানোর আবেদন করা হয়েছে।
নিজামীর যুদ্ধাপরাধ আপিল শুনানিতে স্বীকার করেছেন কি না-এমন প্রশ্নে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আমাদের কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে? বুধবার আপিল শুনানির নবম দিনে নিজামীর আইনজীবীরা তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম বলেছেন, নিজামীর আইনজীবীর তার মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে সাজা কামানোর আবেদনের মধ্য দিয়ে তার মানবতাবিরোধী অপরাধের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন। বুধবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এই কথা বলেন। মাহবুবে আলম বলেন, সাজা কমানো সম্পূর্ণ আদালতের বিষয়। চারটি অপরাধে নিজামীর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে। এইসব অভিযোগে মৃত্দুণ্ড মওকুফ হয়ে যাবে এটা আমি বিশ্বাস করি না। অপরাধ স্বীকারের এ রকম স্পষ্ট বক্তব্য এটাই প্রথম বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল সাহেবের যে বক্তব্য আমি টিভিতে শূনলাম, তা দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং ফৌজদারী আইন সম্পর্কে অজ্ঞতাপূর্ণ। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ যে সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করেছে তাতে জামায়াত আমিরের অপরাধ প্রমাণিত হয় না। শেষ প্রান্তে বলেছি, অনেকগুলো অভিযোগের কোনোটিতে যদি মনে হয়, অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, সেক্ষেত্রেও আসামীর বয়স ও স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনা করে তিনি লঘু দণ্ড পাওয়ার যোগ্য।
জামায়াতে ইসলামীর আমির নিজামী একাত্তরে ছিলেন দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নাজিমে আলা বা সভাপতি এবং সেই সূত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আল বদর বাহিনীর প্রধান। ২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের একটি মামলায় গ্রেপ্তারের পর ওই বছরের ২ অগাস্ট নিজামীকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তখন থেকেই তিনি কারাগারে।
আপিল শুনানির নবম কার্যদিবসে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে যুক্তিতর্ক শেষ করেন আসামিপক্ষ। এরপর রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আগামী ০৭ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করার দিন ধার্য রয়েছে।