খোলা বাজার২৪ : বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০১৫ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ-জেএমবির আদলে নতুন সংগঠিত হওয়া মুজাহিদ অব বাংলাদেশ-এর গ্রেপ্তারকৃত ৬ জঙ্গিকে নিয়ে ব্রিফিং করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
মিন্টো রোডস্থ ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের জানান, এ বছর ধরে এ সংগঠনটি সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
বিচ্ছিন্নভাবে আল-কায়েদার ভাবধারাকে অনুসরণ করে গড়ে উঠা এ সংগঠনটির সঙ্গে বস্তুত আল-কায়েদার কোনো যোগাযোগ নেই। তবে আমরা ধারণা করছি এর শীর্ষনেতাদের কেউ কেউ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে যুক্ত।
বুধবার বিকাল ৫টা ৫৫ মিনিটে মতিঝিল শাপলা চত্বর সোনালী ব্যাংকের সামনে থেকে মুজাহিদ অব বাংলাদেশের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি শাখা ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য (দক্ষিণ) বিভাগ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন : জহিরুল ইসলাম ওরফে আনসার ওরফে চূড়ান্ত লড়াই ওরফে জহির, খন্দকার রাজেশ সোবহান ওরফে রাজু ওরফে কাঁচামরিচ ওরফে আদার ব্যাপারী, আবু বকর সিদ্দিক ওরফে আবীর ওরফে মৌমাছি ওরফে নিয়মের অনিয়ম ওরফে এক টুকরো মেঘ ওরফে সাদাপাতা, আব্রাহাম আহমেদ আল তারেক, মোরশেদুল ইসলাম ওরফে কিং মোর খান, কাজী বাপ্পী আহমেদ ওরফে সাজ্জাদ ওরফে তারিক বিন জিয়া মোল্লা আকতার মোহাম্মদ মনসুর।
ওই সময় তাদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, ১০টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তাকৃতদের মধ্যে জহিরুল ইসলাম এ সংগঠনের শীর্ষনেতা বলে জানিয়েছেন মনিরুল ইসলাম। তিনি জানান, এ সংগঠনে সর্বসাকুল্যে ২০/৩০ জন সদস্য আছে। গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, ফেসবুকের মাধ্যমে নিজেদের যোগাযোগ রক্ষা করা, সদস্য সংগ্রহ, অর্থ সংগ্রহসহ বিভিন্ন ধরনের জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করছে তারা। সম্প্রতি ঢাকায় এক পীরকে হত্যার পরিকল্পনাও করেছেন।
এর আগেও রাজধানীতে এক পীর হত্যার সঙ্গেও জড়িত ছিল এরা। জহিরুল ইসলামের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক সংলগ্ন এলকায় তারা বিভিন্ন সময় জঙ্গি প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেছে।
এদের কার্যকলাপ সম্পর্কে বলতে গিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমেই মূলত তারা বিচ্ছিন্নভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
এরা ফেসবুকের মাধ্যমে অদ্ভূত সব নাম নিয়ে, পেজ খুলে সংগঠনের জন্য সদস্য সংগ্রহ করছে। ফেসবুকের অদ্ভূত নাম ব্যবহারের কারণ হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়ানো।
মুজাহিদ অব বাংলাদেশ নামের এ নব্য জঙ্গি সংগঠনের বড় কোনো অর্থের উৎস নেই জানিয়ে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বলেন, এরা সাধারণত চাকরিজীবী। স্বাভাবিক জীবনযাপন করে। তাদের বেতনের কিছু অংশ দিয়ে তারা সংগঠনটি চালায়। এদের মধ্যে শিক্ষিত এবং কম শিক্ষিতও আছে। এরা প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেক দক্ষ ও সক্রিয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় নিয়মিত মামলা রুজু হয়েছে বলে জানান মনিরুল।