খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ : আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে দলীয় প্রতীক বরাদ্দের অনুরোধ জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি নির্বাচন কমিশন।
ইসি শরীয়তপুরের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এক নির্দেশনায় জানিয়ে দিয়েছে, পৌর নির্বাচনের আইন ও বিধি অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী কাউকে এ পর্যায়ে আর দলীয় প্রার্থী করার আইনগত সুযোগ নেই।
ইসির সহকারী সচিব মো. রাজীব আহসান জানান, বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত নির্দেশনা শরীয়তপুর পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে তারা পাঠিয়ে দিয়েছেন।
শরীয়তপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রফিকুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুক আহম্মেদকে দলীয় প্রত্যয়নপত্র দেন সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
ফারুক আহম্মেদ তালুকদার গত মঙ্গলবার বলেন, “রফিকুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় আমাকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় মনোনয়ন দিয়ে নৌকা প্রতীক বরাদ্দের অনুরোধ জানিয়ে রিটার্নিং অফিসারকে পত্র দিয়েছেন।”
এ বিষয়ে নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবদুল্লাহ আল মামুন নির্বাচন কমিশনের মতামত চেয়ে চিঠি পাঠান।
কমিশনের সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিশ্বাস সুজন কুমার শুক্রবার বলেন, “স্বতন্ত্র প্রার্থীর আর দলীয় মনোনয়নের সুযোগ নেই। ইসির নির্দেশনা আমরা অনুসরণ করব।”
ফারুক আহম্মেদকে দলীয় প্রতীক দেওয়ার অনুরোধের বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর বিএনপি অভিযোগ করে, নির্ধারিত সময়ের পর ‘প্রার্থী বদল’ এবং মনোনয়নপত্রে ‘প্রত্যয়নের’ মাধ্যমে সরকারপ্রধান নিজেই পৌর ভোটে অনিয়ম এবং বিধিভঙ্গের ‘সূচনা করেছেন’।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, তাদের মূল অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে।
“পৌর বিধিতে আছে, ওটা রির্টানিং অফিসারেরই বাতিল করার কথা। ৭ তারিখে তারা প্রার্থী পরিবর্তনের চিঠি গ্রহণ করেন কেন? এটা নির্বাচন কমিশনারকে কীভাবে পাঠানো হল?”
স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন ২০১৫-এর গেজেটের ১২এর উপ-বিধি ৩-এর দফা (গ) এর উপ-দফায় (ইইই) বলা হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দল পৌরসভায় মেয়র পদে একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে পারবে না। একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিলে ওই দলের প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল বলে গণ্য হবে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, “বিধিতে যা বলা রয়েছে তা-ই হবে। আইন-বিধির বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই। আমরা আইন-বিধি মোতাবেক কাজ করব।”
এরপর রাতে শরীয়তপুরের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনার ওই চিঠি পাঠানো হয় কমিশন সচিবালয় থেকে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মেয়র ও কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের নিয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৪ পৌরসভায় ভোট হবে।