খোলা বাজার২৪,রবিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৫: সাইবেরিয়ার সোয়ান লেক-এর পানি কখনো বরফ হয় না। এমনকি মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়ও হ্রদটির পানি বেশ উষ্ণ থাকে। আর শীতের সময় হ্রদটি পরিপূর্ণ হয়ে যায় হাজার হাজার রাজহাঁসে। রাজহাঁসের এই মেলার কারণে হ্রদটির নামকরণই হয়ে গেছে ‘সোয়ান লেক’।
হ্রদটির আসল নাম ‘সেভেটলি লেক’ যা ইউরোজহেনেয়ি গ্রামের কাছে অবস্থিত। সেভেটলি শব্দের অর্থ ‘পরিষ্কার’ অর্থাৎ এই লেকের পানি এতই স্বচ্ছ যে, ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত সবই দেখা যায়। তবে দুই কিলোমিটার আয়তনের হ্রদটি সবার কাছে রাজহাঁসের হ্রদ নামেই পরিচিত।
ফেব্রুয়ারি মাসে স্থানটি রাজহাঁসের বিচরণে মুখরিত হয়ে ওঠে। হাজারো রাজহাঁস যখন হ্রদের পানিতে বিচরণ করে, তখন মনে হয় হ্রদটিই তাদের ঘর-বাড়ি।
সাইবেরিয়ার তাপমাত্রা সাধারণত শুন্যের উপরেই থাকে। তবে শীতকালে আদ্রতা মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়। তীব্র এই শীতেও হ্রদের পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিকই থাকে। হ্রদের উষ্ণ পানি রাজহাঁসদের বসবাসের জন্য খুবই উপযোগী।
১৯৬৭ সালে প্রথম এই হ্রদে রাজহাসেঁর আনাগোনা শুরু হয়। এলাকাবাসীরা জানান, প্রথমবার এখানে মাত্র ১৫টি রাজহাঁস আসে। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে হাঁসের সংখ্যা। বর্তমানে প্রায় ৫৪০০টি রাজহাঁস এই হ্রদে বিচরণ করে। আর দিন দিন তাদের সংখ্যা বাড়ছেই।
এলাকাবাসী আরো জানান, মার্চের দিকে রাজহাঁসগুলো উত্তর সাইবেরিয়া থেকে সেখানে চলে আসে। দীর্ঘ নয় মাস কাটানোর পর তারা আবার তাদের পুরনো বাসস্থানে ফিরে যায়। তবে এ নয় মাসে তারা সেখানে বা”চা জন্ম দেয়। আর পূর্বের বাসস্থানে ফেরার সময় বা”চাগুলো উড়তে শিখে।
হ্রদটির আশপাশের যেসব গ্রাম আছে, সেখানকার বাসিন্দারা এসব রাজহাঁসদের নিয়ে খুবই গর্ববোধ করেন। তারা হাঁসগুলোর প্রতি খুবই যতœশীল। এদের কোনো ক্ষতি যাতে কেউ করতে না পারে, সেজন্য গ্রামবাসিরা সব সময় সজাগ থাকেন।
কেউ কেউ আবার রাজহাঁসদের নিয়ে গান রচনা করেছেন। এদের রক্ষার জন্য সেখানে কয়েকটি সংগঠন তৈরি হয়েছে। এদের কাজ, সেখানে আসা হাঁসগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করা। সংগঠনগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘দ্যা আলটাই রিজন অথরোটিজ’। সংগঠনের কর্মীরা শিকারিদের পাখি শিকারে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।