বিবৃতিতে তারা বলেন, আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। তারা মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
তারা বলেন, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী শুধু বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির আমিরই নন, তিনি একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেমে দ্বীন, ইসলামী চিন্তাবিদ, একজন পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য এই সংগঠনের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
তারা বলেন, মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে যে সব অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও কাল্পনিক। যার প্রমাণ তার জন্মস্থান পাবনার একজন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ ৩ জন বিশিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা। তারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ট্রাইব্যুনালে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন সেখানে তারা স্পষ্টভাবে বলেছেন, মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সাথে তার দূরতম কোনো সম্পর্কও নেই। তারপরও মাওলানা নিজামীকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করায় দেশবাসী বিস্মিত, হতবাক ও গভীরভাবে মর্মাহত।
জামায়াত নেতাদ্বয় বলেন, মাওলানা নিজামী ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। দেশবাসী এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছে। এ রায়ের বিরুদ্ধে মাওলানা নিজামী উচ্চ আদালতে রিভিউ আবেদন করবেন। রিভিউ আবেদনে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে মাওলানা নিজামী অবশ্যই বেকসুর খালাস পাবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
তারা বলেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নামে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। শুরু থেকেই সরকার এই বিচার কার্যক্রমকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা চালায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৩ সালে তদানীন্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিসরে গিয়ে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও আব্দুল কাদের মোল্লার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করে বক্তব্য রাখেন। সরকারের মন্ত্রী ও দলীয় নেতারা নিজামী, মুজাহিদ ও সাঈদীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হবে মর্মে দফায় দফায় ঘোষণা দেন।
তারা বলেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ গঠিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী গণজাগরণ মঞ্চের দাবি বিবেচনায় নিয়ে রায় দেয়ার জন্য বিচারপতিদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের এ ধরনের বক্তব্যে বিচার কার্যক্রমের ওপর সরকারের হস্তক্ষেপ স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়।
বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার হীন উদ্দেশ্যেই সরকার দেশি-বিদেশি সকল মহল ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার আহ্বান উপেক্ষা করে পরিকল্পিতভাবে আবদুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মাদ কামারুজ্জামান ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে হত্যা করেছে।
তারা বলেন, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে ঠান্ডা মাথায় সরকারের নির্ধারিত ছকে হত্যা করে সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশকে এক ভয়াবহ সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে চায়। সরকারের জুলুম, নির্যাতন ও মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আগামীকাল ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করছি।
ঘোষিত কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার জন্য জামায়াতের সকল শাখা এবং কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সুশীলসমাজ ও পেশাজীবীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তথা দেশের আপামর জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান তারা
অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, হাসপাতাল, ওষুধের দোকান, ফায়ার সার্ভিস ও সংবাদপত্রের গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।