খোলা বাজার২৪,শনিবার, ৯ জানুয়ারি ২০১৬: লামায় বিবাহিত যুবতীর নগ্ন ছবি প্রকাশ করে ছোট বোনের ভবিষ্যত বিয়ে ভাঙ্গায় আদালতে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছে বড় বোন। লামা সদর ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ডের মেওলার চর এলাকায় প্রবাসী স্ত্রীর সাথে এ ঘটনা ঘটে।
আদালতের মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ভিকটিমের বাবার বাড়ির পাশ্ববর্তী খামার বাড়ির মালিক আব্দুল মোতালেব এর পুত্র মোঃ আব্দুল্লাহ (১৯) ভিকটিমের ছোট বোনকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনৈতিক কার্য সম্পন্ন করে। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ গত ১৮ অক্টোবর শনিবার লামা বাজারস্থ হোটেল সী-হিলে ৫বছর পরে উভয়ের বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করে।
বিষয়টি মনে প্রাণে মেনে নিতে না পেরে ছেলের পিতা মামলার বিবাদী মোতালেব মেয়ের বড় বোনকে চরিত্রহীন ও বাবার মর্যাদা হানির জন্য ষড়যন্ত্র করে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তার (মোতালেব) আত্মীয় ও খামারের কর্মচারী সৈয়দ আলম (৩৫) দিয়ে ভিকটিমের ছবি সংগ্রহ করে একটি উলঙ্গ ছবির সাথে কম্পিউটারের ফটোশপ-এর মাধ্যমে জোড়া দিয়ে এলাকায় ছড়িয়ে দেয়।
২৪ নভেম্বর ২০১৫ইং মঙ্গলবার লামা সদর ইউনিয়নের মেওলার চর ইব্রাহীমের দোকানে সৈয়দ আলম ইব্রাহীমকে ছবি ৩টি দেখায় ও তার মোবাইলে কপি করে দেয়। ইব্রাহীম ভিকটিমের স্বামীর পরিচিত। ইব্রাহীম ছবি গুলো দেখে চিনতে পেরে নগ্ন ছবির বিষয়ে ভিকটিমের দুবাই প্রবাসী স্বামী মোঃ আক্কাসকে ফোন করে জানায়। বিষয়টি জানতে পেরে ভিকটিমের স্বামী মোঃ আক্কাস ফোনে তালাক দিবে বলে জানায় ও বর্তমানে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে।
ভিকটিমের পিতা মাতা স্ব-শরীরে এসে এ প্রতিবেদকে জানায়, আমার ছোট মেয়ের সাথে অনৈতিক কাজ করে তার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছে মোতালেবের ছেলে আব্দুল্লাহ। শুধুমাত্র লোকলজ্জার ভয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের চাপে বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করি। সিদ্ধান্ত হয় যে আগামী ৫বছর পরে মেয়ের বয়স ১৮বছর পূর্ণ হলে আমাদের মেয়েকে ছেলের বউ করে নেবে মোতালেব। ৫লক্ষ টাকা দেনমোহর দিয়ে আপোষনামা সম্পন্ন করে বিচারকরা। কিন্তু ৩মাস না যেতে ভবিষ্যৎ বিবাহ বন্ধ করতে মামলার ২নং আসামী মোতালেব এর সহযোগিতায় ১নং আসামী সৈয়দ আলম আমার বিবাহিত বড় মেয়ের ছবি নগ্ন ছবির সাথে জোড়া দিয়ে ছড়িয়ে দেয়।
এতে করে তার সুখের সংসার ভাঙ্গতে বসেছে। দুইটি মেয়ের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ আমাদের জীবনের পথচলাকে রুদ্ধ করেছে। প্রতিকার চেয়ে লামা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করি। লামা কোর্টের পিটিশন মামলা নং ০১/২০১৬ তারিখ ৩ জানুয়ারী ২০১৬ইং।
আসামী আব্দুল মোতালেব মুঠোফোনে জানান, নগ্ন ছবি গুলোর বিষয়ে আমি জেনেছি। বিগত দিনে ভিকটিমের বাবার সাথে তাদের জায়গা সীমানা নিয়ে বিরোধ ছিল। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে তারা নিজেরা একাজ করেছে।
অপর আসামী সৈয়দ আলম বলে, নগ্ন ছবি গুলো আমি একজন থেকে পেয়েছিলাম। ইব্রাহিম দোকানদারকে মোবাইল ফোনে ব্ল্-টুথ দিয়ে দিয়েছি মাত্র।
লামা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নয়। উভয়ে আপোষ মিমাংসা করে আমার কাছে আসলে আমি মিমাংসা পত্রে দেখিলাম বলে স্বাক্ষর করেছি মাত্র।
এ বিষয়ে লামা থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক রবিউল হোসেন বলেন, আদালত থেকে মামলার তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মামলাটি এখনো থানার নিয়মিত মামলা হিসেবে নম্বর পড়েনি। রেগুলার মামলা হিসেবে এন্টি হলে তদন্তের কাজ শুরু করা হবে।