Sat. May 10th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

10kখোলা বাজার২৪, বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের করা মানহানির মামলা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, প্রথম কথা হচ্ছে সরকার কোনো মামলা দায়ের করেনি। এটা কোনো ব্যক্তি করেছে। এবং এ ব্যাপারে সরকার কোনো আনুষ্ঠানিক ভাষ্য দেয় নি। দুই নম্বর হচ্ছে যে, মাহফুজ আনাম সাহেব তার স্বীকারোক্তির মধ্য দিয়ে, আধা সামরিক সরকারের আমলে যে ঘটনা ঘটেছে, সে ব্যাপারে দুখঃপ্রকাশ করেছেন। যারা চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছেন এবং অনৈতিক কাজ করেছেন, তারা যদি পরে এটা স্বীকারোক্তির মধ্য দিয়ে ক্ষমা চান এবং ভুল বুঝতে পারেন; আমি মনে করি এটা একটা সাহসের কাজ। এদিক থেকে মাহফুজ আনামকে আমি সাহসী উক্তি করার জন্য প্রশংসা করছি।
বিবিসি: কিন্তু সম্পাদকরা এই তথ্য যাচাই বাছাই না করে ছেপেছেন, আরও অনেক পত্রিকাই করেছে শুধু ডেইলি স্টারই নয়। কিন্তু যারা এসব তথ্য সরবরাহ করেছে, ডিজিএফআইএ’র যেসব কর্মকর্তা সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য সরবরাহ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে।
ইনু: গোয়েন্দা সংস্থা বিভিন্ন ভাবে কাজ করে দেশে বিদেশে। বিভিন্ন দেশে। গোয়েন্দা সংস্থা কাউকে কোনো তথ্য সরবরাহ করা; তার যে কাজের পরিধি সেখানে এটা অন্যায় কি অন্যায় না- সেটা আরেকটা প্রসঙ্গ। সুতরাং একজন সরকারি আমলা বা কর্মকর্তা একটা তথ্য দিলেন, সেই তথ্য যদি সরকারের গোপনীয়তার যে বিধান আছে সেই বিধান ভঙ্গ করে তা শাস্তিযোগ্য হবে। কিন্তু সরকারি কোনো কর্মকর্তা যদি কোনো অন্য বিষয়ে কথা বলেন, সেটা যাচাই করা যেতে পারে, কিন্তু আদৌ বলেছেন কিনা সেটা জানি না আমি।
বিবিসি: যেসব তথ্য ছাপা হওয়ার কারণে আজকে বলা হচ্ছে যে, মাহফুজ আনাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানহানি করেছেন, যারা এসব তথ্য সরবরাহ করেছে, দিয়েছে এসব তথ্য, তাদের বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে।
ইনু: কথাটা হচ্ছে যে, আপনি নিজের মতো করে কিছু মানহানিকর কথা ভাবলেন, চিন্তা করলেন। কিন্তু যতক্ষণ তা প্রকাশ না করছেন এবং জনগণ না জানছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত সেই ব্যাপারে তো কেউ ভূমিকা রাখতে পারেন না। দায়টা আসছে পত্রিকার সম্পাদকের কাছে যিনি প্রকাশ করেছেন। তাকে কে সরবরাহ করলো, কিভাবে সরবরাহ করলো সেটা তদন্ত করতে পারেন। সুতরাং এটাও খতিয়ে দেখতে পারি যে- গোয়েন্দা সংস্থার কাজের পরিধি কি। সে ব্যাপারে আমরা কর্মপদ্ধতি ঠিক করে দিতে পারি।
বিবিসি: সামরিক বাহিনীর এই গোয়েন্দাদের যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল সেগুলো ভিডিও এখন ইউটিউবে সার্চ করলেই দেখা যায়। যে নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এসব তথ্য দিয়েছিলেন; দুর্নীতির এই অভিযোগের যেসব খবর যেগুলো যাচাই বাছাই করা হয় নি, সেই নেতারা কিন্তু সরকারি দলের ভেতরেই আছেন।
ইনু: জি, সরকারি দলের ভেতরেই আছেন। এবং প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে মিথ্যাচার করেছেন। এবং মানহানিকর উক্তি করেছেন। যদি বিচার আচারের প্রশ্নই ওঠে, মানহানির ঘটনাই ঘটে, তো সবাই বিচারযোগ্য, শুধু মাহফুজ আনাম কেন হবেন।
বিবিসি: সে ধরনের কোনো উদ্যোগ কি সরকার নেবে। সেই বিচারের?
ইনু: আমার মনে হয় সরকার এ নিয়ে কোনো মাথা ঘামাচ্ছে না এ মুহূর্তে। মাহফুজ আনামের উক্তি, আমি মনে করি গণমাধ্যমের জন্য এটা একটা শিক্ষা। এবং আমি তো মনে করি উনি সাহসের কাজ করেছেন।
বিবিসি: একটা অভিযোগ উঠেছে, যেসব সম্পাদক বা সংবাদপত্র সরকারের সমালোচনা করে, তাদেরকে হয়রানি করার জন্য এসব করা হচ্ছে।
ইনু: না, এই অভিযোগ সঠিক নয় কারণ, মাহফুজ আনামকে তো ধরে সরকার এ উক্তি দিতে বাধ্য করেন নি। উনি নিজের থেকেই বলেছেন যে, আধা সরকারি সরকারের আমলে এ ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত। সুতরাং তার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, আলোচনা হচ্ছে। এটাও গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গলজনক।