Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

43kখোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: বিগত সময়ে সরকার পতন আন্দোলনে রাজধানী ঢাকাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল তেমন কিছু করতে না পারলেও পদের জন্য তাদের মধ্যে চলছে উত্তেজনা, মারামারি এবং কোন্দল। ছাত্রদলের এমন কাণ্ডে দলের ভেতরের অনেকেই বলছেন, আন্দোলনে তেমন কিছু করতে না পারলেও পদের জন্য অনেক কিছু করছে এ ছাত্র সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।
গত ৬ ফেব্র“য়ারি শনিবার রাতে রাজীব আহসানকে সভাপতি ও মো. আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওইদিন কমিটির অনুমোদন দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করার পর থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে দলটির পদ না পাওয়া নেতাকর্মীদের মধ্যে। এ উত্তেজনা রুপ নেয় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থিত ছাত্রদলের অফিস ভাঙচুরের মাধ্যমে।
সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। তারা কার্যালয়ের সামনে থাকা তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে পল্টন থানার সামনে থেকে একটি নিয়ে এসে অতর্কিত এ হামলা চালায়। ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রয়েলের নেতৃত্বে এ হামলা চলে বলে বেশ কিছু গণমাধ্যমের খবরে প্রচার করা হয়।
এসময় ‘এলাকা প্রীতি, অর্থ-বাণিজ্য ও পকেট কমিটি, মানি না মানবো না’ শ্লোগান দিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের নিচ তলায় দলের সামগ্রী ও বিক্রিয় কেন্দ্র ভাঙচুর করে তারা। এরপর একদল নিচতলায় জিয়ার ম্যুরাল ও খালেদা জিয়ার ছবি ভাংচুরের পর উপরে উঠে যায়।
এরপর তারা ভবনের চতুর্থ তলায় থাকা ছাত্রদলের কার্যালয়ে আগুন দেয়। আগুনে ওই কার্যালয়টি ভস্মীভূত হওয়ার পাশাপাশি পাশের যুবদল কার্যালয়ও আংশিক পোড়ে বলে জানান, আগুন নেভাতে যাওয়া দমকলকর্মীরা।
এই অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর ছাত্রদলের ‘পদবঞ্চিত’ নেতা-কর্মীরাই ঘটিয়েছে বলে পল্টন থানার ওসি মোরশেদ আলম দাবি করেন।
তবে ওইদিন বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘সরকারের এজেন্টরাই একাজ করেছে এবং সেজন্যই পুলিশ নিশ্চুপ ছিল।’শুধু সোমবারের ঘটনাতেই থেমে নেই পদ বঞ্চিতরা। এরপর মঙ্গলবার ও বুধবারে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে তারা। বৃহস্পতিবার বিকেলে কার্যালয়ের সামনে ৩টি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এ ঘটনা ছাত্রলের পদবঞ্চিতরাই ঘটিয়েছে বলে গুঞ্জন রটেছে।
আন্দোলনে ঢাকা মহানগরীতে তেমন কিছু না করতে পারলেও ছাত্রদলের এমন আচরণ নতুন নয়। এরআগে ২০১৪ সালেও কমিটি নিয়ে দন্দে জড়িয়ে পড়ে দেশের অন্যতম বৃহত্তম এ ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বড় সংগঠনে পদের জন্য মাঝে মাঝে এগুলো হয়। তবে এটা কোনো দলের জন্যই সুখের বার্তা নয়।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘যারা এগুলো করেছে তারা ছাত্রদলের কেউ নয়, তারা সরকারের এজেন্ট।’
তিনি আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়া এবং জিয়াউর রহমান বা দলের সাবেক নেতাদের ছবি যারা ভাংচুর করে তারা ছাত্রদলের কেউ না। সরকার ভিন্ন নামে, ভিন্ন কৌশলে বিএনপির অফিস আক্রমণ করেছে।’
বেশ কিছু গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে ছাত্রদলের একজন সহ-সভাপতির নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তাহলে তিনি কি সরকারের লোক? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের বা বিএনপির অফিস আক্রমণ করবে সে বিএনপি বা ছাত্রদলের কেউ হতে পারে না, সে সরকারেরই লোক।’