খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১২ মার্চ ২০১৬ : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ড থেকে রিজাভের এ পর্যন্ত সরকারের স্বীকারকৃত ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার লোপাট বা চুরি হয়ে গেছে। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ন্যাক্কারজনক জালিয়াতির ঘটনা এটি। এই টাকা চুরিতে বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের প্রভাবশালী মহল ও সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত বলে বাংলাদেশ ব্যাংক স্বীকার করেছে। সরকারের লোক জড়িত ছাড়া এতো বড় জালিয়াতির ঘটনা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে দেশবাসীও বিশ্বাস করে। আশ্চর্য হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা এখন উড়ছে ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ড থেকে ৮০০ কোটি টাকা লোপাট হওয়ায় অবিলম্বে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি। শুক্রবার বিকেলে নয়পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব রুহুর কবির রিজভী।
রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের দাবি- হ্যাক করে এই অর্থ সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের বিশাল অংকের অর্থ দেশের বাইরে থেকে অজ্ঞাতনামা হ্যাকাররা চলতি বছরের ফেব্র“য়ারি মাসে হ্যাক করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক বলছে- তাদের এখান থেকে হ্যাকিং হয়েছে এর কোনো প্রমাণ নেই। তারা এর দায় পুরোপুরিভাবে বাংলাদেশের ওপরই চাপিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কয়েক মাস পূর্বে দেশের আর্থিক খাতে এতোবড় জালিয়াতির ঘটনা ঘটলেও সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮০০ কোটি টাকা উধাও হয়ে যাওয়ায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করে লুকোচুরি শুরু করে। পরে ঘটনার সত্যতা এবং পত্র পত্রিকার আলোচনা-সমালোচনায় তারা বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেন। জালিয়াতির এতোবড় ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের প্রভাবশালী মহল ও ব্যাংক কর্মকর্তারা জড়িত বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায় থেকে স্বীকারও করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সর্বশেষ বিশাল অংকের অর্থ লোপাটের ঘটনায় দেশের আর্থিক খাতে ব্যাপক ধস নামবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের শীর্ষ পর্যায়ের অর্থনীতিবিদরা। দেশের অর্থনীতিকে রাবিশে পরিণত করার জন্য অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর দায়ী। ৮০০ কোটি টাকা হ্যাক হয়ে যাওয়ার পরও তারা এখনো দায়িত্ব পালন করছেন কোন নৈতিক অধিকারে? আমরা অবিলম্বে অর্থমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করছি।’