খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১২ মার্চ ২০১৬ :জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যাওয়া রক্ষীদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পাওয়া গেলে ওই রক্ষীদের দলটিকে (ইউনিট) নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এই বিধান রেখে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নিপীড়নের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হলো।
আজ শনিবার বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ১৪ সদস্য এই প্রস্তাব সমর্থন করেছে। বিরত ছিল মিসর।
গত বছর ১০টি মিশনের শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন নিপীড়নের ৬৯টি অভিযোগ পাওয়া যায়। এর আগের বছর, অর্থাৎ, ২০১৪ সালে এমন অভিযোগের সংখ্যা ছিল ৫২ টি। অভিযোগ ওঠা শান্তিরক্ষীদের তালিকায় রয়েছে সামরিক সদস্য, পুলিশ, অন্যান্য কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক।
জাতিসংঘের অধীনে কোনো কাজে যুক্ত থাকা অবস্থায় কোনো শান্তিরক্ষীর বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে, তা তদন্তের দায়িত্ব ওই শান্তিরক্ষীর দেশের। এ কারণে যৌন নিপীড়নের অভিযোগগুলোর বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারছিল না জাতিসংঘ। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে জাতিসংঘ এ ধরনের উদ্যোগ নিল।
যুক্তরাষ্ট্রের করা এই প্রস্তাব অনুযায়ী, শান্তিরক্ষী মিশনের সেনা বা পুলিশের ছোট দলের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে, তাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যেখানে এ ধরনের অভিযোগগুলোর যথাযথ তদন্ত করা হয় না, সেখানকার ওই দলটিকে প্রত্যাহার করে নতুন একটি মোতায়েন করার কথাও এই প্রস্তাবে আছে।
পুরো সেনাদলকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিধানটিতে আপত্তি জানায় মিসর। শেষ মুহূর্তে তাদের এই সংশোধনী গৃহীত না হওয়ায় ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে মিসর। মিসরের মতো আরও কয়েকটি দেশ এই বলে আপত্তি তুলেছে যে, এর ফলে একক কোনো ব্যক্তির অপরাধের জন্য সমষ্টিগত শাস্তি ভোগ করতে হবে সবাইকে।
সাম্প্রতিক সময়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ তোলে, জাতিসংঘের এক শান্তিরক্ষী ১২ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করেন। একটি স্বাধীন তদন্ত দলের তদন্তে বেরিয়ে আসে, শান্তিরক্ষী কর্তৃক শিশু ধর্ষণের ঘটনাগুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা একটি বড় বিষয়। জাতিসংঘ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এমন সমালোচনার মুখে ব্যবস্থা নিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জাতিসংঘ।