Sat. Mar 15th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

 খোলা বাজার২৪, রবিবার, ২৪ এপ্রিল ২০১৬: আমাদের দেশে যে হারে শিক্ষিতের হার

কর্মসংস্থান নেই, মুদি দোকান তো আছে!
কর্মসংস্থান নেই, মুদি দোকান তো আছে!
বৃদ্ধি পাচ্ছে সে হিসেবে কর্মসংস্থান নগণ্য। ফলে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেও মানুষ ঘরে বসে আছে। নিজের মনমতো চাকরি পাওয়া যাচ্ছে না। এতে করে বেকারত্বের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ছোটবেলা আমাদেরকে শিক্ষা দেয়া হয়, কোন কাজ ছোট নয়। কিন্তু আবার বড় হবার সাথে সাথে পাশের বাড়ির রহিম, করিম, যদু, মদু ইত্যাদির সাথে তুলনা দেয়া হয়। কথায় কথায় প্রসঙ্গ আসে, তার ছেলে বা মেয়ে বিশাল এক কাজ করে, আর তুমি কি কর?
আমাদের সমাজ ব্যবস্থা এমন যে, যার যত বেশি টাকা সে তত বেশি সম্মানিত। আবার শুধু কাজ করলেই হবে না, তা হতে হবে সম্মানিত কাজ। ছেলে হলে ইঞ্জিনিয়ার আর মেয়ে হলে ডাক্তার সচরাচর এরকম স্বপ্ন দেখা যায় বেশিরভাগ মা-বাবার।
একজন সন্তান জন্মের সাথে সাথে তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেয়া হলে ওই মুহূর্ত থেকে সেই সন্তানের স্বপ্ন মুখ থুবড়ে পড়ে। যার ফলে তাদের মনোবল ভেঙ্গে যায়। তাদের আর ভিন্ন কিছু হবার সাধ থাকে না। ফলে অচিরেই তারা গুঁটিয়ে যায়।
আবার নিজেদের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে যারা নিজেদের পড়াশোনা শেষ করে, তারা চাকরি না পাবার কারণে পিছিয়ে পড়ে। তখন আবার অভাব ছাড়া প্রশ্নের ছড়াছড়ি। আচ্ছা, তখন কি কর্মসংস্থান নিজে করে নেয়া যায় না? স্নাতক পাশ ছেলেমেয়ে যদি মুদির দোকানে বসে তাহলে কি পৃথিবী শেষ হয়ে যাবে? এটা কি কোনও কাজ নয়?
গত দুইদিন ধরে ইন্টারনেট মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে উঠেছে লিখনের ছবি। সে একজন কোটিপতি হয়েও ফেরিওয়ালা। তিনি ধানমন্ডিতে ফেরি চালিয়ে লেডিস ও জেন্টস পণ্য বিক্রয় করেন। তার হাতের ক্যামেরা ও ফোন দেখলে যে কেউ বুঝে যাবে সে বিত্তবান পরিবারের ছেলে। কিন্তু এরপরও সে এই পথ বেঁছে নিয়েছে।
লিখন বলছিলেন, আমার কাছে কোনো কাজই ছোট নয়। সব কাজই মহান। কাজ সবসময় কাজই। কাজের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকা উচিত নয়। কাজকে নানা শ্রেণি ও খাতে ভাগ করার জন্যই আজকে বেকারত্ব বাড়ছে।
তিনি বলেন, আমার অনেক শিক্ষিত ভাইয়েরা পছন্দ মতো কাজ না পেয়ে বেঁচে থাকার জন্যই অসৎ পথ বেছে নেন। কিন্তু আমাদের উচিত সব কাজকে সমান চোখে দেখা। আমি মনে করি মন্ত্রী ও বাদাম বিক্রেতার কাজের মধ্যে কোনো তফাৎ থাকা উচিত নয়।
‘বেকার যুবক ভাইদের লাজ-লজ্জা ভেঙে দেওয়ার জন্যই আমি এই কাজ বেছে নিয়েছি। সামনে ইচ্ছে আছে লুঙ্গি পরে রিকশা চালাবো। এরপরই ফেরি করে বাদাম বিক্রি শুরু করবো।’
সেই লিখনের কি আছে না আছে তা ইতিমধ্যে সকলের সামনে প্রতীয়মান। কিন্তু এরপরও সে খুব ভাল একটি পথ দেখিয়েছেন। ঘরে বসে থেকে বেকারত্ব বৃদ্ধি না করে এরকম কাজ করে যার যার পরিবারকে সচ্ছল করে নেয়া উচিৎ। তাহলে আমরা একদিন অবশ্যই সমৃদ্ধ বাংলাদেশের দেখা পাব।