খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২০ মে, ২০১৬: জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য মোসাদের (ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা) চক্রান্ত আবিষ্কার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘যখনই বাংলাদেশে ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির কথা জনগণ জানতে চায়, যখনই প্রধানমন্ত্রীর ছেলের একাউন্টে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের সন্ধান পাওয়া যায়। তখনই এ চক্রান্তের কথা বলা হয়েছে।’
রাজধানীর নয়পল্টনে ভাসানী ভবনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন তিনি।
‘বাংলাদেশ সামগ্রিক উন্নয়নে শহীদ জিয়ার পরিবারের অবদান’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে আরাফাত রহমান কোকো যুব ও ক্রীড়া সংসদ।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এখন আবার বলা হয়েছে যার সম্পর্কে অভিযোগ উনি মোসাদের কেউ না। উনি ইসরাইলি সরকারের উপমন্ত্রী একজন সাবেক কর্মকর্তা। আমার দেশে উপমন্ত্রী আছে না? তাও আবার সাবেক কর্মকর্তা। তার সঙ্গে আবার ষড়যন্ত্র হয় নাকি? তার সঙ্গে ষড়যন্ত্র কী হবে? আর কে গেছে ষড়যন্ত্র করতে আসালাম চৌধুরী। কবে মার্চ মাসে তখন সে ছিল বিএনপির একজন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক। তার সাংগঠনিক ব্যাপারে মতামত দেওয়ার কোনো অধিকার থাকে?’
‘আরে এ সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এত বেশি সেই দেশে কোনো বেকুব যাবে ষড়যন্ত্র করতে। এটা বিশ্বাসযোগ্য নাকী? এটা অসম্ভব। কার সাথে ষড়যন্ত্র ইসরাইল। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ইসরাইলের ষড়যন্ত্র হতে পারে তারা ধর্মনিরপেক্ষ দল। কিন্ত বিএনপি তো ধর্ম নিরপেক্ষ দল নয়; বিএনপি আল্লাহর ওপর অসীম আস্তা, বিশ্বাস রাখার দল। সেই দল যাবে ইসরাইলের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করতে? যে ইসরাইল ফিলিস্থিনের লক্ষ লক্ষ মুসলমানদের মেরেছে, তারা ইসলামবিরোধী শক্তি’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘এ সব অসম্ভব অবিশ্বাস্য যুক্তি নিয়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরিয়ে দেওয়া যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘এর আগে একটি ষড়যন্ত্রের কথা বরা হয়েছে। আমেরিকাতে প্রধামন্ত্রী পুত্রকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু এ অভিযোগ আমেরিকার আদালত তা বাতিল করে দিয়েছে। আজকে এ মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করে মেরে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে।’
‘শফিক রেহমানের বাড়িতে তল্লাশি করে ডকুমেন্ট পাওয়া গেছে গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করছে। আমরা দাবি করছি, কী কী ডকুমেন্ট পাওয়া গেছে তা প্রকাশ করে দিন। খুনের ডকুমেন্ট থাকলে তার সাজা হবে। কিন্তু ডকুমেন্টে যা আছে তা প্রকাশ করলে সারাদেশে ছি ছি পড়ে যাবে,’ বলেন তিনি।
এ ধরনের চক্রান্ত চলতে থাকবে। এ জন্য নেতাকর্মীদের সাবধান থাকা দরকর, বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই বলে জানান তিনি।
গাজীপুরের জঙ্গলে, আশুলিয়া ও সাভারে খালি লাশ পাওয়া যায় উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এটা স্বাধীন দেশের জন্য লজ্জা। একটা স্বাধীন দেশের নাগরিক নিরাপত্তা পাবে না। এটা হতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্রের নামে রসিকতা চলছে। আপনাকে নির্বাচনে দাঁড়াতেই দেওয়া হচ্ছে না। বিএনপির প্রার্থী হলেই নানা নির্যাতন নেমে আসবে।’
১৯৮৬ সালের নির্বাচন বর্জনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন না যাওয়া নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। হয়ত একদিন ইতিহাস বলবে ২০১৪ সালের নির্বাচন ১৯৮৬ সালের নির্বাচনের মতই। খালেদা জিয়া যে কথা বলেন সে অনুযায়ী চলেন বলেই তিনি আপসহীন নেত্রী।’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না। উপজেলা, পৌর নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এটা প্রমাণ হয়েছে।’
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারপারম্যান তারেক রহমানের রাজনৈতিক জীবন নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।
সংগঠনের সভাপতি আলমগীর হোসেন লাবুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপিরে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফুর ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক প্রমুখ।
