Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

25খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১২ জুলাই ২০১৬: আলিফ হোসেন,তানোর : রাজশাহীর তানোরের কামারগা ইউপির ভবানীপুর দাখিল মাদরাসায় নানা অনিয়ম ও দূর্নীতিতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশের সংবিধান মেনে চলতে গেলে যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে পাঠাদান শুরুর বাধ্যবাধকতা থাকলেও এখানে তা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদরাসার বেশিরভাগ শিক্ষক-কর্মচারি বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকায় তারা পাঠদানের পরিবর্তে রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় পাঠদান ব্যবস্থা মূখ থুবড়ে পড়েছে। এছাড়াও পুরো রমজান জুড়েই মাদরাসায় জামায়াত-শিবিরের আয়োজনে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে অধিক্ংশ সময় মাদরাসায় পাঠদানের শুরুতে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না উড়েনা জাতীয় পতাকা। আবার শিক্ষক-কর্মচারিরা বিএনপি জামায়াতের রাজনীতিতে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকায় তারা অভিভাবকদের বিভিন্ন কৌশলে বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করতে নানা অপতৎপরতা করে চলেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত ১৯৮১ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় ভবানীপুর দাখিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানের আড়ালে জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতি জনমত গড়ে তুলতে বিভিন্ন কৌশলে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করা হয়। এছাড়াও যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে জনমত তৈরীর জন্য শিক্ষার্থীদের দিয়ে জামায়াত-শিবিরের পোস্টার সাটানো ও লিফলেট বিতরণ করাসহ নানা অপতৎপরতায় লিপ্ত করছে। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানের প্রধান থেকে শুরু করে শিক্ষকদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক পরিচয় এবং রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে সাধারণের মধ্যে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও সচেতন মহলের অভিযোগ, জামায়াত-শিবিরের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতায় মাদরাসার যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অপরদিকে মাদরাসায় জাতীয় সংগীত চর্চা, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু ও সরকার প্রধানের প্রতিকৃতি না রাখা, জাতীয় বা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মৌলবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতা ও আধূনিক চিন্তা-চেতনার বিষয়গুলোকে সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়ে নৈতিক শিক্ষার নামে জামায়াতি ধ্যাণ-ধারনায় ছাত্র-ছাত্রীদের গড়ে তোলার লক্ষে করা হয়। আবার শিক্ষার্থীদের জামায়াতের বিভিন্ন জেহাদি বই পুস্তক পড়ানোর পাশপাশি তাদের দিয়ে জামায়াত-শিবিরের প্রচারপত্র-লিফলেট ও পোষ্টার শাঁটানো হয় গ্রামগঞ্জে। অপরদিকে অধিকাংশ শিক্ষক বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সক্রিয় থেকে বিভিন্ন প্রচারপত্র জেহাদি বই বিতরণ করেন। এলাকার অভিভাবক, সচেতন মহল ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, সভাপতি ও সুপার বড় অংকের টাকা নিয়ে ভূয়া সনদে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে স্থানীয় জামায়াত নেতার আতœীয় শাহানাজ পারভীনকে নিয়োগ করেছে। এব্যাপারে মাদরাসার সুপার মাওলানা মতিউর রহমান বলেন, বেশিরভাগ শিক্ষক-কর্মচারি বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত এই অভিযোগ সত্য হলেও নিয়মিত জাতীয় সংগীত হয় না বা পতাকা উড়েনা অভিযোগ মোটেও সত্য নয়। তিনি বলেন, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে তার কোনো হাত নাই এটা কমিটির বিষয়। এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা বাধ্যতামুলক। যদি কোন প্রতিষ্ঠান বিধি লংঘন করে তাহলে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।