Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

16kখোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০১৬: কোনো স্যালুট নয়। পুশ আপ বা নয় সেনাবাহিনীর মতো ড্রিল। ইংলিশদের উদযাপনে থাকল না পাকিস্তানিদের মতো নাটকীয় কিছু। শুধু কিছু হাসি মুখ আর ‘হাই ফাইভ’। চোখে মুখে তৃপ্তিটা অবশ্য ধরা পড়ল। ফুটে উঠল সিরিজে সমতা ফেরানোর স্বস্তি।
লর্ডসে জয়ের পর পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের অতি নাটকীয় উদযাপনে ভ্রু কুঁচকে গিয়েছিল অ্যালেস্টার কুকের। এবার বিশাল জয়ের পরও সাদামাটা উদযাপনে ইংলিশরা যেন বার্তা দিতে চাইল, এক টেস্ট জিতেই ভেসে যাচ্ছে না তারা উচ্ছ্বাসে! লর্ডসে চারদিনে হেরে যাওয়া ইংল্যান্ড সিরিজে ফিরল দাপটে। চারদিনের হারটা ফিরিয়ে দিল চারদিনে জিতেই। ব্যবধান বরং অনেক বড়, পাকিস্তানের ৭৫ রানের জয়ের বিপরীতে ইংল্যান্ডের জয় ৩৩০ রানে!
শেষ ইনিংসে পাকিস্তানের লক্ষ্য ছিল ৫৬৫। লক্ষ্য তো অসম্ভব ছিলই; লড়াই করে ইংল্যান্ডকে কিছু সময়ের অস্বস্তিও উপহার দিতে পারেনি পাকিস্তান। গুটিয়ে গেছে ২৩৪ রানেই। পাকিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়।
আগের দিন বিকেলে ইংল্যান্ডের অগ্রগতি থামিয়েছিল বৃষ্টি। পাকিস্তানের হার বাঁচাতে পারত কেবল বৃষ্টিই। কিন্তু চতুর্থ দিনে ম্যানচেস্টারের আকাশে কালো মেঘ থাকলেও তা ঝরেনি জল হয়ে। ইংল্যান্ড কাজ সেরে নিয়েছে এক দিনেই।
দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়ানডের গতিতে শুরু করা ইংল্যান্ড সোমবার সকালে ব্যাট করেছে টি-টোয়েন্টির গতিতে। এদিন ৯ ওভারে ৭৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেন কুক। ইংল্যান্ড অধিনায়ক নিজে অপরাজিত থাকেন ৭৮ বলে ৭৬ রানে। প্রথম ইনিংসে ২৫৪ রানের পর রুট এবার অপরাজিত ৪৮ বলে ৭১ রানে!
পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের মাঝে দেখা যায়নি লড়াইয়ের তৃষ্ণা। মেঘলা আকাশের নিচে ছন্দ খুঁজে পান চোট কাটিয়ে ফেরা জেমস অ্যান্ডারসন। দ্রুতই ফিরিয়ে দেন শান মাসুদ ও আজহার আলিকে।
তৃতীয় উইকেটে মোহাম্মদ হাফিজ ও ইউনুস খান যোগ করেন ৫৮ রান। ইনিংসের একমাত্র অর্ধশত রানের জুটি হয়ে থাকে সেটিই। হাফিজ-ইউনুসের পর অধিনায়ক মিসবাহও আউট হয়েছে থিতু হওয়ার পর। লেজের দিকে ওয়াহাব রিয়াজ, আমিরদের ব্যাটে ম্যাচ কেবল দীর্ঘায়িত হয়েছে খানিকটা।
ব্যাট হাতে পর্যাপ্ত সুযোগ না পাওয়া মঈন আলি ৩ উইকেট নিয়ে নিশ্চিত করেছেন জায়গা ধরে রাখা। আর ‘ক্রিস ওকস এক্সপ্রেস’ তো ছুটছেই। আগের টেস্টে ১১ উইকেট নিয়েও সয়েছিলেন পরাজয়ের বেদনা। এবার ম্যাচে ৭ উইকেটে হাসলেন জয়ের হাসি। শেষ উইকেট নিয়ে ম্যাচের ইতিও তার হাতেই।
দারুণ জয়ে ইংল্যান্ডের অস্বস্তির কাঁটা কেবল বেন স্টোকসের ইনজুরি। হাঁটুর অস্ত্রোপচারের পর এই টেস্টেই ফেরা অলরাউন্ডার মাঠ ছেড়েছেন বোলিংয়ের সময় চোট নিয়ে।
তৃতীয় টেস্টের আগে অবশ্য সময় আছে বেশ খানিকটা। ৩ অগাস্ট তৃতীয় টেস্ট শুরু এজবাস্টনে। এর আগে পাকিস্তান ২ দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে উস্টারশায়ারের বিপক্ষে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫৮৯/৮ (ইনিংস ঘোষণা)
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১৯৮
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (তৃতীয় দিন শেষে ৯৮/১) ৩০ ওভারে ১৭৩/১ (কুক ৭৬*, হেলস ২৪, রুট ৭১*; আমির ১/৪৩, রাহাত ০/৫৪, ইয়াসির ০/৫৩, আজহার ০/২১)।
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫৬৫) ৭০.৩ ওভারে ২৩৪ (হাফিজ ৪২, মাসুদ ১, আজহার ৮, ইউনুস ২৮, মিসবাহ ৩৫, শফিক ৩৯, সরফরাজ ৭, ইয়াসির ১০, ওয়াহাব ১৯, আমির ২৯, রাহাত ৮*; অ্যান্ডারসন ৩/৪১, ব্রড ০/৩৭, স্টোকস ০/২১, মঈন ৩/৮৮, ওকস ৩/৪১, রুট ১/০) ।
ফল: ইংল্যান্ড ৩৩০ রানে জয়ী
সিরিজ: চার ম্যাচ সিরিজের দুই টেস্ট শেষে ১-১
ম্যান অব দা ম্যাচ: জো রুট।