Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

11খোলা বাজার২৪, রোববার, ৩১ জুলাই ২০১৬: চীন সাগরে বিরাটকায় এক গভীর নীল খাদের সন্ধান মিলেছে। যদিও জায়গাটির মালিকানা নিয়ে চীন, ভিয়েতনাম আর তাইওয়ানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। তবু চীনের প্যারাসেল দ্বীপের কাছে অবস্থিত এই গভীর নীল খাদকে বিশ্বের সবচেয়ে গভীর নীল খাদ বা ব্লু হোল বলে দাবি করেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা।
স্থানীয়ভাবে এটির নাম ড্রাগন হোল বা ড্রাগনের খাদ। চীনা বিজ্ঞানীরা মাত্র কিছুদিন আগে এই খাদ নিয়ে গবেষণা শুরু করলেও দেশটির লোকসাহিত্যে বহু আগে থেকেই চর্চিত খাদটির কথা। স্থানীয় জেলেরা বিশ্বাস করেন ১৬ শতকের বিখ্যাত চীনা উপন্যাস ‘জার্নি টু দ্য ওয়েস্টে’ বর্ণিত বানর রাজা তাঁর সোনার গদা এই ড্রাগন হোলেই খুঁজে পেয়েছিলেন।
এখন আসি ব্লু হোল বা নীল খাদ কী সে বিষয়ে। সাধারণত সমুদ্রের তলদেশে শতাধিক ফুট গভীর কিছু গর্ত বা খাদ থাকে। বিশেষ ধরনের গাঢ় নীল রঙের কারণে সমুদ্রের উপরিতল থেকেও এদের অবস্থান বোঝা যায়। মূলত সূর্যের আলো খাদের তলদেশ পর্যন্ত না পৌঁছানোয় ওই স্থানটুকুর পানি অন্য স্থানের পানির চেয়ে নীল দেখায়।
চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছে, ড্রাগন হোলের গভীরতা ৯৮৭ ফুট। যা বাহামা দীপপুঞ্জের কাছের ডিনস ব্লু হোলের চাইতে ৩০০ ফুট বেশি। এতদিন ডিনস ব্লু হোলই বিশ্বের সবচেয়ে গভীর সমুদ্র তলদেশের খাদ হিসেবে পরিচিত ছিল।
এই মুহূর্তে ড্রাগন হোল নিয়ে গবেষণা করছে সানশা শিপ কোর্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর কোরাল প্রোটেকশন। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা এরই মধ্যে ওই ড্রাগন হোল থেকে ২০ প্রজাতির মাছের সন্ধান পেয়েছে। যদিও তারা কেবল ওই লম্বা সুড়ঙ্গের ওপরের অংশ নিয়েই গবেষণা করেছেন। কারণ ৩৩০ ফুট গভীরে কোনো অক্সিজেন নেই। সেন্সরযুক্ত রোবট ব্যবহার করে এসব তথ্য পেয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি।
ওশান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইয়াং জুশেং চীনের সিসিটিভিকে জানান, এই ধরনের ব্লু হোলের ওপর পরিপূর্ণ গবেষণাই বলতে পারে যে ১০ বা হাজার বছর ধরে এখানে কী ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেলে দক্ষিণ চীন সাগরের জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য, বাস্তুতন্ত্র ইত্যাদি সম্পর্কে ভালোভাবে জানা যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
চীনা গবেষকরা আনুষ্ঠানিকভাবে এ খাদের নাম দিয়েছেন দ্য সানশা ইয়োঙ্গাল ব্লু হোল। যদিও স্থানীয়ভাবে এটি ড্রাগন হোল নামেই বেশি পরিচিত। অবশ্য বিশ্বের গভীরতম সমুদ্র তলদেশের খাদ হিসেবে চীনের বিজ্ঞানীদের দাবি নিয়ে অনেক গবেষক সন্দেহও প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বলছেন, সমুদ্রের তলদেশে আরো গভীর খাদ বা গর্তও থাকতে পারে।