Sat. Oct 18th, 2025
Advertisements

5kখোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২ আগস্ট ২০১৬:  গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর জঙ্গিদের যে ছবি কথিত আইএসের আমাক এজেন্সিতে প্রকাশিত হয়েছিল তাতে আরবি ভাষায় লেখা কালো কাপড়ের একটি পতাকা দেখা গেছে।
এদিকে, কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকেও উদ্ধার করা আলামতের মধ্যে আরবি হরফে লেখা একটি কালো কাপড়ের পতাকা জব্দ করা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, তারা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছেন, দুটি পতাকা একই। গুলশান হামলার আগে জঙ্গিরা যে পতাকা পেছনে রেখে ছবি তুলেছিলেন, কল্যাণপুরেও সেই পতাকা পেছনে রেখেই ছবি তুলেছেন তারা।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, এতে প্রমাণিত হয়, গুলশান হামলায় জড়িতদের সঙ্গে কল্যাণপুরের জঙ্গিদের যোগাযোগ ছিল।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলছেন, গুলশান-শোলাকিয়ার হামলা ও কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নিহত জঙ্গিরা একই গ্রুপের। তাদের মাস্টারমাইন্ডও একই ব্যক্তি। একই ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণও নিয়েছেন তারা। গুলশানের হামলার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মুখে তারা আগের আস্তানা ছেড়ে কল্যাণপুরের এই বাসায় এসে ওঠেন। বাসা পরিবর্তনের সময় জঙ্গি সদস্যরা সেই পতাকাও সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আইএসের অনুসারী হিসেবে জেএমবির এই ভগ্নাংশটি নিজেদের আইএসের লোক বলে প্রমাণ করার জন্য চেষ্টা করেছেন। এ কারণে আইএসের পতাকার পাশাপাশি তাদের অপারেশনাল পোশাকও ব্যবহার করেছেন। বড় কোনও হামলার পরিকল্পনা করে এসব ছবি তুলে তারা গোপনে সেই ছবি আইএসের কথিত আমাক এজেন্সির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন, যাতে হামলার পরপরই আইএসের মাধ্যমে এর দায় স্বীকার করা যায়। এছাড়া দাবিক ম্যাগাজিনের মাধ্যমে ছবি প্রকাশ করে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়েও দেওয়া যায়।
কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, এগুলো হলো দেশিয় জঙ্গিদের আন্তর্জাতিক হয়ে ওঠার কৌশল। আইএসের পতাকা ব্যবহার করলে আইএস সদস্য হিসেবে যাতে তাদের গণ্য করা হয়।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম চৌধুরী, সাইফুল্লাহ ওজাকি, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এটিএম তাজ উদ্দিন ও নাজিবুল্লাহ আনসারী দেশিয় জঙ্গিদের আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে ভূমিকা রেখেছেন। তামিম চৌধুরী ছাড়া বাকিরা সবাই বর্তমানে সিরিয়ায় অবস্থান করছেন বলে কাউন্টার টেররিজমের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
সিটিটিসির ভারপ্রাপ্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা দুটি ঘটনা থেকেই জব্দকৃত আলামত পরীক্ষা করে দেখছি। তাদের বিদেশি যোগাযোগ, দেশিয় সাংগঠনিক কার্যক্রম সবই পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করেন জঙ্গিরা। প্রায় ১০ ঘণ্টা পর সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে সন্দেহভাজন এক শেফসহ ছয়জন নিহত হয়। হামলার পর আইএসের পক্ষ থেকে এর দায় স্বীকারও করা হয়। প্রকাশ করা হয় জঙ্গিদের ছবি। জঙ্গিদের পেছনে ছিল আইএসের কালো পতাকা।
গত মঙ্গলবার কল্যাণপুরের একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়েও একই ধরনের একটি পতাকা জব্দ করা হয়। এই অভিযানে নিহত হন নয় জঙ্গি।