Fri. Sep 19th, 2025
Advertisements

খোলা বাজার২৪, শনিবার, ২০ আগস্ট ২০১৬: তাপস কুমার, নাটোর: কোরবানী ঈদকে টার্গেট করে নাটোরে চলছে দেশি গরু মোটাতাজা করার কাজ। এই বছর ৩০০কোটি টাকার প্রায় ৩৬হাজার গরু মোটাতাজা করছে দেশীয় খামারিরা। তবে খামারিদের দাবী, দেশিয় খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করা হলেও ভারত থেকে গরু আসার কারণে নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয় তারা। তাই এবারের ঈদের আগেও ভারত থেকে গরু নিয়ে শঙ্কা খামারিদের মনে। এদিকে অবৈধ উপায়ে কেউ খাতে গরু মোটাতাজা করতে না পারে সেজন্য খামারগুলোতে বিশেষ নজরদারি রেখেছে প্রাণী সম্পদ।
জেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, সামনে কোরবানী ঈদ তাই নিজেদের পালিত গরুর প্রতি বিশেষ আদর যতœ চলছে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার হামলাইকোল, গারিসাপাড়া, খামারনাচকৈড়, ধারাবারিষা, চাঁচকৈর হাট, বামনগাড়া সহ এলাকার প্রতিটি খামারে। ওইসব এলাকায় অন্তত ৫৫ থেকে ৬০টি খামারে বাণিঝ্যিক ভাবে গরু মোটাতাজা করা হয়।
সরেজমিনে কয়েকটি খামারে গিযে দেখা যায়, প্রতিবারের মতো এবারো কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে স্বাভাবিক খাদ্য খাইয়ে গরু মোটাতাজা করণ প্রক্রিয়া চলছে। কোরবানী ঈদকে টার্গেট করে এখানকার খামারিরা একবছর আগে দেশীয় জাতের গরু ক্রয় করেন। এরপর দেশিয় খাবার খড়, ভূষি, ভাত খাইয়ে মোটাতাজা করা হয় বলে দাবী খামারিদের। কিন্তু খাবারের মূল্য বৃদ্ধি আর প্রাণী সম্পদের সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ খামারিদের।
গুরুদাসপুর উপজেলার কালাকান্দার গ্রামের আলমগীর হোসেন ও আজিমুদিন শেখ মইনুল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন খামার মালিক জানান, প্রতিবছর কোরবানি ঈদের এক থেকে দেড় মাস পর উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে জাতের গরু কিনে আনেন। তারা এসব গরুকে খৈল, ভুসি, খুদের ভাত, খড় ও সবুজ ঘাস খাইয়ে এবং পরিচর্যা করে মোটাতাজা করে তোলেন। এরপর খামার মালিকরা কোরবানির ঈদের আগে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গরুগুলো বিক্রি করেন। এ ছাড়া অনেকের খামারে ক্রেতা বা পাইকাররা গিয়ে গরু কিনে নিয়ে যান। এতে তারা বেশ লাভবান হন।
তারা আরও জানান, মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক কোনো ওষুধ গরু মোটাতাজা করণে তারা ব্যবহার করেন না।
উপজেলার চাঁচকৈর মধ্যপাড়া খামারি আলমগীর হোসেন জানান, তারা গরুগুলোকে গমের ভুসি, খুদের ভাত, খড়, কাঁচা ঘাসসহ বিভিন্ন খাদ্য খাওয়ান। এ ছাড়া গরুর বিভিন্ন ধরনের পরিচর্যা করে থাকেন। খামারগুলো হওয়ার কারণে তাদের কর্মসংস্থান হয়েছে।
নাটোর জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলতাফ হোসেন জানান, জেলা জুড়ে স্থানীয় প্রাণি সম্পদ বিভাগের তত্বাবধান ও পরামর্শে বেশ কয়েক বছর ধরে দেশীয় খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজাকরণের কাজ চলছে। ট্যাবলেট দিয়ে গরু মোটাতাজাকরণ ঠেকাতে বিগত কয়েক বছর ধরে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে যার ফলে জেলায় স্বাভাবিক খাদ্যে গরু মোটাতাজা করণ হচ্ছে।
আলতাফ হোসেন আরো জানান, কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে নাটোর জেলার ৭টি উপজেলাতে প্রতিবছর খামারিরা প্রচুর গরু মোটাতাজা করে থাকে। এতে প্রায় ২০ হাজার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়। এবছর এ জেলা থেকে প্রায় ৩৬ হাজার গরু কোরবানির ঈদে বিক্রি হবে, যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ শত কোটি টাকা।