সুমাইয়া বুবলি । । খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ : একুশ শতকের জ্ঞান বিজ্ঞানের চরম উৎকসের মধ্যেও বির্শ্বব্যাপি এইডস জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি মারাত্তক হুমকি। পৃথিবীর কোন কোন অঞ্চলে এটি এক নম্বর ঘাতক ব্যাধি। সাম্যগ্রীক ভাবে বির্শ্বের ঘাতক ব্যাধি হিসেবে এর অবস্থান চতুর্থ। তবে সাধারন বিচারে বলা যায় এটি সবচেয়ে মারাত্বক মানুষিক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী ব্যাধি। এইডস নামটি শুনলেই আমাদের অন্তর আত্তা কেপে উঠে। আমরা এক সময় এই রোগটি আফ্রিকার পশ্চিমা বির্শ্বের রোগ বলেই জানতাম।
এইডস এর কালো থাবা বাংলাদেশেও বিস্তার লাভ করেছে এবং আমাদের প্রতিবেশি দেশ গুলোতে এর ভয়াবহ বিস্তার ঘটার প্রেখিতে আমাদের ঝুকির মাত্রাটা আরও বেড়েছে । Acquired Immune Deficiency. Syndrome বা AIDS একটি ধংসাত্বক ব্যাধি। যা ভাইরাস সক্রোমনের মাধ্যমে রোগির দেহে বাসা বাধে। এ ভাইরাসের নাম ঐরা (Human Immune Deficiency Virus)। এটি মানব দেহে প্রবেশ করে তার রোগ প্রতিরোগ ব্যবস্থাকে এমন ভাবে বিনষ্ট করে দেয় যে সাধারন রোগ জীবানু তখন অপরিরুদ্ধ গতিতে শরিরকে কুড়ে কুড়ে অকাল মৃত্যু নিশ্চিত করে।
এই ভাইরাস অন্য সব ভাইরাসের মতোই। তবে এর কার্যপদ্ধতি ভিন্ন ধরনের। এ ভাইরাসের কেন্দ্র সমূহের RNA চারদিকে প্রোটিনের দুটি স্তর ও চর্বি যুক্ত পর্দা দ্বারা শক্ত ভাবে আটকানো থাকে। সেই সঙ্গে নানা প্রকার যারক রস বা এনজেম থাকে। যার মধ্যে Reverse Transciptase প্রধান। ঐরা ভাইরাস আক্রান্তদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সুযোগ সন্ধানি ভাইরাস ও রোগ জীবানু দ্বারা শরির সহজেই আক্রান্ত হয়। এমন অবস্থায় রোগিকে যক্ষা, নিউমোনিয়া, বিকোলাংগতা, স্নায়ুবিকব্রইকল, ক্যান্সার ইত্যাদিতে ভুগতে দেখা যায়। WHO এর ২০১০ সালের রির্পোট মতে বর্তমানে বির্শ্বে এইডস আক্রান্ত লোকের সংখ্যা ৩ কোটি ৩৪ লক্ষ। ২০০৮ সাল থেকে প্রতিদিন নতুন করে একহাজার বা তার বেশি শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। UNAIDS এর রির্পোট মতে বাংলাদেশে ঐরা আক্রান্ত লোকের সংখ্যা ১২ হাজার। এইডস এ আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় ৬ শতাধিক মানুষ মৃত্যু বরন করেছে।
সারা বির্শ্বে এইডস ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ আকারে। আফ্রিকার কয়েকটি দেশে শতকরা ৩০ ভাগ মানুষ এইডস আক্রান্ত। তাদের জিডিপির একটি বিরাট অংশ ব্যায়িত হচ্ছে এইডস রোগের চিকিৎসায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে এইডস আক্রান্ত ব্যাক্তির রক্ত, বির্য, মুত্র, থুথু এবং মায়ের দুধে ঐরা অবস্থান করে। এটি কোন ছোয়াচে রোগ না হলেও এই ভাইরাস নানা প্রক্রিয়ায় বিস্তার লাভ করতে পারে। এইডস সক্রামনের মূলে রয়েছে শিরায় মাদক গ্রহন ও অনিয়ন্ত্রিত যৌনাচার। ভয়ংকর ব্যাপাড় হলো আমাদের সমাজে মাদকের বিস্তার যেমন ঘটেছে তেমনি অবাধ যৌনাচার ব্যাধির মত সংক্রামক হয়ে উঠেছে। পর্নো গ্রাফির নীল ছোবলে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে বীকৃতি বাড়ছে এবং বাড়ছে এইডস সক্রামনের ঝুকি। এ ক্ষেত্রে জন সচেতনা সব চেয়ে গুরুত্ব পুর্ণ বিষয়। সচেতন থেকে শৃংখলা পুর্ণ জীবন যাপন করলে এইডস রোগের অভিসাব থেকে আমরা মুক্ত থাকতে পারবো। সেজন্য আমাদের যুব ভাই-বোনদের সচেতনতা অবলম্বন করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আপনারা আমাদের প্রচলিত মূল্য বোধ ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন। এতে আমাদের জীবন অর্থবহ হবে, বেশ এগিয়ে যাবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, চরপাড়া, ময়মনসিংহ।