Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

15kখোলা বাজার২৪, শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬: চিন্তা-ভাবনাটা ছিল অনেক দিন ধরেই। আশঙ্কাও ছিল জোরদার। এত দিনে একেবারে হাতেনাতে পরীক্ষামূলক ভাবে তা প্রমাণিত হয়ে গেল। মোবাইল ফোন বড়ই বিপজ্জনক।
ওই ফোন ব্যবহারের সময় যে রেডিও-তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে, তা থেকে ম্যালিগন্যান্ট ক্যান্সার অনিবার্যই। এমনকী, তা আমাদের ব্রেন ক্যান্সার বা ব্রেন টিউমারের সম্ভাবনাও বহু গুন বাড়িয়ে তোলে।
সব সময় চালু টেলিভিশন সেটের সামনে বসে থাকলেও ছড়িয়ে পড়া রেডিও-তরঙ্গ আমাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে অনেক গুন বাড়িয়ে তোলে।
আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’-এর তত্ত্বাবধানে একেবারে হালের একটি গবেষণার ফলাফল ওই তথ্য দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সেই ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার’ জার্নালে।
আর তার পরেই বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোড়ন শুরু হয়ে গিয়েছে গোটা মার্কিন মুলুকে। ওয়াশিংটনে, ‘ফেডারাল কমিউনিকেশন্স কমিশন’ (এফসিসি) একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, তারা এ ব্যাপারে শীঘ্রই ব্যবস্থা নিতে চলেছে।
আড়াই কোটি ডলার খরচে ওই গবেষণাটি চালানো হয়েছে ‘ন্যাশনাল টক্সিকোলজি প্রোগ্রামে’।
ওই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে রেডিও-তরঙ্গে মার্কিন মুলুকে টেলিভিশন সম্প্রচার করা হয়, বা চালানো হয় উপগ্রহ মারফত যোগাযোগ ব্যবস্থা, সেই রেডিও-তরঙ্গ অনিবার্য ভাবেই ম্যালিগন্যান্ট ক্যান্সারের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলে।
ওই গবেষণায় পরীক্ষা চালানো হয়েছিল ইঁদুরের ওপর। তাতে দেখা গিয়েছে, ওই বিশেষ রেডিও-তরঙ্গ পুরুষ ইঁদুরের শরীরে দু’ধরনের ম্যালিগন্যান্ট ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
মূল গবেষক ক্রিস্টোফার পোর্টিয়ার তাঁর গবেষণাপত্রে জানিয়েছেন, যে রেডিও-তরঙ্গ থেকে পুরুষ ইঁদুররা ম্যালিগন্যান্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে, আমাদের রোজকার ব্যবহার করা মোবাইল ফোন থেকে সেই রেডিও-তরঙ্গই ছড়িয়ে পড়ে নিয়মিত ভাবে। সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তিতে বানানো মোবাইল ফোন থেকেও ছড়িয়ে পড়ে ওই একই রেডিও-তরঙ্গ।
সহযোগী গবেষক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্সার রোগ বিশেষজ্ঞ, অনাবাসী ভারতীয় তরুণ অগ্রবাল ই-মেলে আনন্দবাজারকে জানাচ্ছেন, ‘‘ওই বিশেষ রেডিও-তরঙ্গের মাত্রা বাড়ানো হলে, ইঁদুররা আরও বিরল ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। খুব দ্রুত হারে। সেই ক্যান্সার বা টিউমারটা হচ্ছে তাদের মস্তিষ্কে। যেটাকে বলে ‘গ্লিওমাস’।
তারা আক্রান্ত হচ্ছে আরও ধরনের ক্যান্সারে। তাদের হৃদযন্ত্রের ওই ক্যান্সারকে বলে ‘শোয়্যানোমাস’। কিন্তু ওই রেডিও-তরঙ্গের স্বাভাবিক মাত্রায় (যা রোজ মোবাইল ফোন থেকে ছড়িয়ে পড়ে) ওই দুই ধরনের ক্যান্সারে ইঁদুরগুলো আক্রান্ত হচ্ছে না।
মানুষের ক্ষেত্রেও ওই রেডিও-তরঙ্গের প্রভাব একই রকম হবে। আলাদা হওয়ার অন্তত কোনও বৈজ্ঞানিক কারণ নেই।’’
বৃহস্পতিবার ওই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হতেই তুমুল হই চই শুরু হয়ে গিয়েছে মার্কিন মুলুকে। ফলে, যারা সব সময় মোবাইল ব্যবহার করেন, তাঁরা একটু সাবধানে থাকবেন! মাথায় রাখবেন, দিবারাত্র মোবাইল ফোন ব্যবহারের বিপদ-আপদ!